পারিজাত মোল্লা: শনিবার আলিপুর আদালতে সিবিআই এজলাসে উঠে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত সুজয় ভদ্রের কন্ঠস্বর পরীক্ষা সংক্রান্ত মামলা। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা নিয়ে বারবার টালবাহানা চলছে । তাঁর শারীরিক অবস্থা কেমন আছে জানতে এবার মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করবে জোকা ইএসআই হাসপাতাল। এদিন এই নির্দেশ দিয়েছে আলিপুরের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত।
সুজয়কৃষ্ণ তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা দেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা রয়েছেন কি না? সে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে মেডিক্যাল বোর্ড।কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডির আবেদনের ভিত্তিতে এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আদালতের নির্দেশ, -‘ইএসআই হাসপাতালকে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে হবে। সেই বোর্ড তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে কণ্ঠস্বরের নমুনা দিতে পারবেন কি না? তার রিপোর্ট করবে। বিশেষ মেডিক্যাল টিমে থাকবেন ইডির একজন অফিসার থাকবেন। ইএসআইয়ের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকও থাকবেন’।
উল্লেখ্য, শুরুর দিকে জোকা ইএসআই হাসপাতালেই সুজয়কৃষ্ণর চিকিত্সা চলেছিল। সেক্ষেত্রে সুজয় ভদ্রের শারীরিক অবস্থার রেকর্ড সেখানে রয়েছে বলে জানা গেছে । হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের পর গত অগাস্ট থেকে এসএসকেএমে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন কালীঘাটের কাকু খ্যাত সুজয় ভদ্র। ইডির দাবি,-‘ আদালতের নির্দেশ থাকলেও শারীরিক অসুস্থতা মানসিক চাপের কারণ দেখিয়ে ইডি কে তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে দিচ্ছেন না এসএসকেএমের চিকিত্সকরা’।
নিয়োগ দুর্নীতির টাকা সুজয়কৃষ্ণের কোম্পানিতে পৌঁছেছে কি না তা জানতে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই দুর্নীতির তদন্তে সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করার আগে হাওড়ার শ্যামপুরের এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়িতে তল্লাশি চালান ইডির গোয়েন্দারা।
বাজেয়াপ্ত হয় বহু নথি ও তাঁর ফোন।ইডির তদন্তকারীদের দাবি, -‘ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা লেনদেন করতেন। তাঁর ফোনে উদ্ধার হয় একটি কল রেকর্ডিং। তাতে সুজয়কৃষ্ণ ওই যুবককে ফোন থেকে যাবতীয় তথ্য মুছে ফেলতে বলছেন’।গত অগাস্টে সুজয়কৃষ্ণের স্ত্রী বিয়োগ হয়। এর ফলে প্যারোলে মুক্তি পান তিনি। প্যারোল শেষে জেলে ফিরেই বুকে ব্যথা অনুভব করেন। চিকিত্সকরা জানান তাঁর হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। আদালতের কাছে বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করাতে চেয়ে আবেদন করেন সুজয়কৃষ্ণ। অনুমতি দেয় আদালত। বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের কয়েক দিনের মধ্যেই ছুটি পেয়ে যান তিনি। এর পর তাঁকে ভর্তি করা হয় এসএসকেএমে ।
গত অগাস্ট থেকে সেখানেই ভর্তি রয়েছেন তিনি।অক্টোবরে সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন করে ইডি। আদালত জানায়,-‘ যে কোনও জায়গায় সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে পারবে ইডি’।
এর পর সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চিকিত্সক ও যন্ত্রপাতি নিয়ে দু বার এসএসকেএমে হাসপাতালে হাজির হন ইডির আধিকারিকরা। কিন্তু সুজয় ভদ্রের কাছে তারা পৌঁছাতে পারেনি। এরপর সুজয়কৃষ্ণের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখতে এএসআই হাসপাতালের চিকিত্সকদের দিয়ে তাঁকে পরীক্ষা করার আবেদন জানায় তদন্তকারী সংস্থা। সেই আবেদনে এদিন ছাড়পত্র দিল আলিপুর আদালত।