পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: মণিপুরে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে এবার তৎপর হল ১০ রাজনৈতিক দল। জানা গিয়েছে, এই ১০ রাজনৈতিক দলের একটি প্রতিনিধি দল মণিপুরের রাজ্যপাল আনুসুইয়া উইকের সঙ্গে দেখা করেছে। সেখানে তারা রাজ্যপালের কাছে অনুরোধ করেছেন, রাজ্যে শান্তি ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর জন্য দুটি যুদ্ধরত গোষ্ঠীর (কুকি, মেইতেই) মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু করা হোক।
রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজ্যপালের এই বৈঠকের বিষয়টি রাজভবনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে।
কংগ্রেস বিধান পরিষদ নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও ইবোবি সিংয়ের নেতৃত্বে এই ১০ রাজনৈতিক দলের একটি প্রতিনিধি দল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে। রাজ্যপালের কাছে তারা একটি স্মারকলিপিও জমা দেয়। সেখানে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ ছাড়া, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ ছাড়া রাজ্যে শান্তি ফেরানো কার্যত সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে তারা অবিলম্বে কুকি-মেইতেই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু করার দাবি জানাচ্ছে। যাতে আলোচনার মাধ্যমে মণিপুরে এই চলমান সংঘাতের একটি স্থায়ী সমাধান করা যায়।
প্রতিনিধি দলটি বিবাদমান কুকি-মেইতেইদের সাথে আলোচনা শুরু করার জন্য পদক্ষেপ করার অনুরোধ করে রাজ্যপালকে। রাজ্যপালের কাছে তাদের আরও অনুরোধ, এই বিষয়ে তিনি নিজে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করুন। মণিপুরে চলমান সংঘাতের সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করুক রাজ্যপাল।
প্রতিনিধি দলটি রাজ্যপালের কাছে আরও অনুরোধ করেছে, তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। প্রতিনিধি দলটি’তে ছিল আম-আদমি পার্টি, এআইএফবি, এআইটিসি, সিপিআই, সিপিআইএসএমভি, জেডিএসইউভি, এনসিপি, আরএসপি সহ মোট ১০টি দল।
জানা গিয়েছে, বৈঠকে রাজ্যপাল প্রতিনিধি দলটিকে আশ্বাস দিয়েছেন, রাজ্যে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেবেন। রাজভবনের পক্ষ থেকে এই প্রসঙ্গে এক বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য সম্ভাব্য প্রতিটি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এমনকি তিনি এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও যাবেন।
উল্লেখ্য, মণিপুরে কুকি-জো উপজাতিদের সংগঠন আইটিএলএফ বুধবার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল-উপজাতি সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে তারা স্ব-শাসন প্রতিষ্ঠা করবে। তাদের এই হুঁশিয়ারির পরই এই ১০ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি দলটি রাজ্যের রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করল। যদিও রাজ্য সরকার কুকি-জো অধ্যুষিত জেলাগুলিতে এভাবে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর আহ্বানের তীব্র নিন্দা করেছে। এটিকে বেআইনি বলে অভিহিত করেছে।
উল্লেখ্য, মণিপুরের আইটিএলএফ (ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডার্স ফোরাম) সম্প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যেই পৃথক প্রশাসন গড়ে তোলা হবে। আদিবাসী কুকি-জো উপজাতির মানুষদের স্বার্থেই এই পৃথক প্রশাসন স্থাপন করা হবে। ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুয়ান টোম্বিং জানিয়ে ছিলেন, আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে তাঁরা একটি ‘স্ব-শাসিত পৃথক প্রশাসন’ গড়তে প্রস্তুত। কেন্দ্র এর স্বীকৃতি না দিলেও তাঁরা আলাদা প্রশাসন ব্যবস্থা চালিয়ে যাবেন।