আব্দুল বারী মাসুদ, নয়াদিল্লি : গত ৪২ দিন ধরে মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গুনছে ফিলিস্তিনিরা।যুদ্ধ বিরতির কোনও নাম গন্ধ নেই।এখনও পর্যন্ত শিশু সহ ১২ হাজার নীরিহ মানুষের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।যুদ্ধ বিরতির ডাকের বদলে আগুনে ঘি ঢালছে পশ্চিমা দেশগুলি।এমন পরিস্থিতিতে প্রথমবার সরকারিভাবে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে চলমান গণতহ্যার তীব্র নিন্দা জানাল কংগ্রেস।
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ জয়রাম রমেশ বলেছেন, হামাসের আক্রমণের পর ইসরাইল এখন যা করছে তা আসলে গণহত্যা। রমেশ বলেন, কংগ্রেস অবিলম্বে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানাচ্ছে।
তিনি বলেন, সেখানে যেভাবে নারী, শিশু, হাসপাতালগুলিকে টার্গেট করা হচ্ছে, তা মানবতা বিরোধী। যুদ্ধের আন্তর্জাতিক নীতি পর্যন্ত লঙ্ঘন করা হচ্ছে।ফিলিস্তিনে জ্বালানি, বিদ্যুৎ, ওষুধ, অপারেশনের জন্য ব্যবহৃত চেতনানাশক ওষুধ, বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কোনওটাই পাঠাতে দিচ্ছে না ইসরাইল। এখন নতুন করে হাসপাতালগুলিকে টার্গেট করা হচ্ছে।সদ্য জন্মানো শিশুদেরও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। যুদ্ধের ইতিহাসে এটা ভয়াবহ অধ্যায় বলা চলে। নিহত ১০ হাজার মানুষের মধ্যে অর্ধেক শিশু।ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, গাজায় প্রতি দশ মিনিটে একজন শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে।
রমেশ বলেন, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গাজাকে ধংসস্তুপে পরিণত করার হুমকি দিচ্ছেন।
ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষা ব্যবহারের জন্য তিনি ইসরাইলি নেতাদের সমালোচনা করেন।কংগ্রেস নেতা বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের কয়েকজন মন্ত্রী যে ধরনের অমানবিক ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা হলোকাস্টের আগে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছিল, তার মতই শোনাচ্ছে।
মানবাধিকার নিয়ে যে সব দেশ সারাবছর গলা ফাটায়, কিন্তু আসল সময়ে মানবাধিকারের নামে দ্বিচারিতা করে, সেইসব দেশেরও তীব্র সমালোচনা করেন জয়রাম রমেশ।নাম না করে তিনি বলেন, পশ্চিমা কিছু দেশ ইসরাইলের পিঠ চাপড়ে দিচ্ছে। এই সব দেশ সুবিধা মতো মানবাধিকারের ব্যাখ্যা পাল্টে ফেলছে। ইউক্রেন বা গাজার হত্যাযজ্ঞের সময় তাদের মানবাধিকারের কথা মনে থাকে না। রমেশ বলেন, এখনই যুদ্ধবিরতির ডাক দিতে হবে।দ্বিতীয় নাকবা যেন না হয়।এই ঘটনা চুপ করে দেখতে পারে না গোটা বিশ্ব।
রমেশ বলেন, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস ভারত সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছে, যাতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে তারা আমেরিকা, ইসরাইল ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে চাপ দেয়। যাতে অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা যায়।
সবার বিবেক জাগ্রত হওয়ার আগে আর কত নীরিহ মানুষের প্রাণ যাবে, এই প্রশ্ন তুলেছেন জয়রাম রমেশ।
উল্লেখ্য, সরকারিভাবে না হলেও গাজার এই গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধি, শরদ পাওয়ারের মত নেতারা।বাম দলগুলি অনেক আগেই যুদ্ধ বিরতির জন্য সওয়াল করেছে।পথে নেমে তারা নিন্দাও জানিয়েছে। যদিও মুখে কুলুপ এঁটে থেকেছে সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি, জেডিইউ, জেডিএস–র মত দলগুলি।