পুবের কলম ডেস্ক:
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে চলেছে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি। বুধবার সন্ধ্যায় এই নির্বাচনী নির্ঘন্ট দেশের মানুষের জন্য ঘোষণা করেন সে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজি হাবিবুল আউয়াল। বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারে সিইসির ঘোষণা সম্প্রচার করা হয়। এই নির্বাচন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির সম্ভাবনা দেখছে পুলিশ প্রশাসন। বাংলাদেশে ইসলামিক আন্দোলন নামে একটি সংগঠন নির্বাচন কমিশন ভবন ঘেরাও করার ডাক দিয়েছে। তাদের সঙ্গে বিএনপি এবং জামাত–ই–ইসলামও যোগ দিতে পারে বলে আশঙ্কা পুলিশের। তাই নির্বাচন কমিশনের ভবন ঘিরে রেখেছে নিরাপত্তা বাহিনী।বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং সমমনস্ক অন্য দলগুলি নির্বাচন বয়কট করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইস্তফা চেয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন চালাচ্ছে।সমাবেশ,হরতাল এবং একের পর এক অবরোধ চলছে।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্ঘন্ট অনুযায়ী, এই নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। আর মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর। সুতরাং এখন পদ্মাপারে নির্বাচনের দামামা বেজে গেল। সেখানের রাজনৈতিক দলগুলি এখন প্রচারে জোর দেওয়ার পরিকল্পনা নিতে চলেছে। এই আবহে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের ডাক দিয়েছে। তাদের মূল দাবি, আওয়ামি লিগের সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং নির্বাচন অবিভক্ত প্রশাসনের মাধ্যমে করতে হবে।
অন্যদিকে আমেরিকা এই বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বেশি উৎসাহী। তাই শর্তহীন আলোচনায় বসতে বাংলাদেশের প্রধান তিন দলকে চিঠি দেন আমেরিকার দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। আজ, বুধবার সকালে সেই চিঠির কপি শাসকদল আওয়ামী লিগের সাধারণ সম্পাদক তথা সেতুমন্ত্রী ওয়াবদুল কাদেরের হাতে তুলে দেন ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। আর আওয়ামী লিগ নেতা জানিয়ে দেন, নির্বাচন ঘোষণা শুধু সময়ের অপেক্ষা। এখন আর আলোচনার কোনও অবকাশ নেই।
ঘোষিত নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
নির্ঘণ্ট ঘোষণাকালে সিইসি আরও জানান, এবারের সংসদ নির্বাচনে ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, তার আগে ৯০ দিনের মধ্যে ভোট হতে হবে। সেই হিসাবে গত ১ নভেম্বর নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে। ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা আছে।