পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: মিউনিখে শুরু হয়েছে মিউনিখ লিটরেচার ফেস্টিভ্যাল। চলবে ১৫ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বুকারজয়ী খ্যাতনামা লেখিকা অরুন্ধতী রায়কে। সেখানেই উদ্বোধনী ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। অথচ যেতেই দেওয়া হল এই লেখিকাকে। ১৩ বছর আগে অরুন্ধতী একটি ভাষণ দিয়েছিলেন। তার জন্য বিচারের মুখে তিনি। অরুন্ধতী মন্তব্য করেছিলেন মনমোহন জামনায়, কিন্তু তাকে সাজা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে মোদি জমানায়।
২০১০ সালে বুকার পুরস্কার বিজয়ী সাহিত্যিক অরুন্ধতীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন সুশীল পণ্ডিত ও ‘রুটস ইন কাশ্মীর’ নামের কাশ্মীরি পণ্ডিতদের এক সংগঠন। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ, ১৫৩বি ও ৫০৫ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। অভিযোগ, ‘আজাদি: দ্য অনলি ওয়ে’ নামের ওই অনুষ্ঠানে কাশ্মীরকে ভারতের থেকে বিচ্ছিন্ন করার নাকি দাবি তোলা হয়েছিল। অরুন্ধতী নাকি বলেছিলেন কাশ্মীর কোনওকালেই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল না। জানা গিয়েছে লেখিকা অরুন্ধতী রায় মিউনিখের সাহিত্য উৎসবের উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন না। তবে ১৬ নভেম্বর তিনি ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন।
লেখিকা অরুন্ধতী রায়ের সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের সম্পর্ক খুবই খারাপ। হিন্দুত্বকে সামনে রেখে যে ফ্যাসিবাদী রাজনীতি চলছে, বহুবার খোলা মঞ্চে তার সমালোচনা করেছেন অরুন্ধতী। সাধারণ কাশ্মীরিদের হয়ে তিনি বহুবার মুখ খুলেছেন। যা ভালোভাবে নেয়নি বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ আফজল গুরুর ফাঁসিকে ভারতের ইতিহাসে ‘কালো অধ্যায়’ বলেছিলেন অরুন্ধতী। তিনি বলেছেন, কাশ্মীরের স্বাধীনতার জন্য অহিংস আন্দোলন হচ্ছে। ভারত সরকার সেই আন্দোলনের উপর লাগামহীন সন্ত্রাস চালাচ্ছে। ২০২০ তে কেরলের বিজেপি সভাপতি কে সুরেন্দ্রন রাজ্যপাল আরিফ মুহাম্মদ খানকে চিঠিতে লিখেছিলেন হিন্দুত্ববাদীদের ফ্যাসিস্ত বলতেও ছাড়েননি ওই লেখিকা। তাই তার লেখাগুলি কেরলের পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়া হোক।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হ্যানি বাবুর গ্রেফতার নিয়ে নরেন্দ্র মোদি সরকারকে তুলোধোনা করেছিলেন অরুন্ধতী। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছিলেন, ‘যাঁরা ধর্মনিরপেক্ষ, জাতপাত-বিরোধী এবং পুঁজিবাদ-বিরোধী রাজনীতির প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং হিন্দু ফ্যাসিবাদের বিকল্প হয়ে উঠছেন, তাঁরা সরকারের ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন; এই সব সমাজকর্মী, শিক্ষাবিদ, আইনজীবীদের একের পর এক গ্রেফতার করা হচ্ছে।’