পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ফিলিস্তিনের উপর বর্বরচিত হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। নাগাড়ে বোমা, মিসাইল নিক্ষেপ করে কার্যত জনশূন্য উপত্যকায় পরিণত করা হচ্ছে গাজাকে। এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে দেখা গেল ভারতীয় শিখ সম্প্রদায়কে। তারা অকপট জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের মানবিক সাহায্য প্রয়োজন।
শিখ সম্প্রদায়ের একটি প্রতিনিধি দল দিল্লিতে ফিলিস্তিনের দূতাবাসে গিয়ে সে দেশের আধিকারিকদের কাছে নিজেদের সহমর্মিতার কথা জানিয়ে আসে। তারা জানায়, এই ভয়ংকর যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তারা ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের যন্ত্রণার কথা ভেবে ব্যাকুল। দিল্লি শিখ গুরুদ্বার ম্যানেজমেন্ট কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা জাগো পার্টির সভাপতি সর্দার মনজিত সিং জি কে’র নেতৃত্বে শিখদের একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার দিল্লির ফিলিস্তিন দূতাবাসে গিয়ে সে দেশের আধিকারিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ফিলিস্তিনে চলমান মানবিক সংকটের বিষয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। আন্তর্জাতিক শান্তি ও সম্প্রীতির পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে মনজিত সিং বলেন, পশ্চিম এশিয়ার এই চলমান সংঘাত নিয়ে বিশ্বের শিখরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই সংঘাতের কারণে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন—উভয় দেশের মূল্যবান প্রাণহানি ঘটেছে। শিখ ধর্মের প্রথম ধর্মগুরু গুরু নানকের সার্বজনীন ভ্রাতৃত্বের নীতি অনুসারে শিখরা সবসময় বিশ্বশান্তি ও সম্প্রীতির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।
তাঁর কথায়, ‘আমরা উপলব্ধি করতে পারছি যে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র বর্তমানে মানবিক সংকটের সম্মুখীন। মানবজাতির কল্যাণের স্বার্থে শিখরা সবসময় কাজ করে থাকে। আর এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের অসহায় মানুষদের প্রতি আমাদের সহযোহিতার হাত বাড়াতে চাই। ফিলিস্তিনের সাধারণ নাগরিকের ন্যূনতম প্রয়োজনীয়তা, খাদ্য সরবরাহ প্রভৃতি বিষয়গুলি সম্পর্কে আমাদের অবগত করানো যেতে পারে।’
বৈঠকের সময় প্রতিনিধি দলটি ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগপ্রকাশ করে। ফিলিস্তিনিদের মানবিক সহায়তা প্রদানের অংশ হিসেবে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও কাঁচা রেশন সরবরাহ করার প্রস্তাব দেয়। উল্লেখ্য, ভারত সরকার যখন হামাসকে ‘জঙ্গি’ তকমা দিয়েছে, সেই পরিস্থিতিতে শিখ সম্প্রদায়ের এই উদ্যোগ বিশেষ তাৎর্পপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলনের সময় নামাযরত মুসলিম কৃষকদের পাহারা দিতে দেখা গিয়েছিল শিখ সম্প্রদায়ের লোকদের।
এই ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, কয়েকজন মুসলিম নামাযে দাঁড়িয়েছেন। আর তাঁদের পাহারা দিচ্ছেন শিখরা। এই ভিডিয়ো দেখে নেটিজনরা লিখেছিলেন, এটাই ভারতের আসল চিত্র। কোনও ধর্ম-বর্ণ আমাদের আলাদা করতে পারে না। আমাদের সবাইকে প্রতিটি কঠিন সময়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।