পারিজাত মোল্লা: শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে আইনি রক্ষাকবচ পেলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল, ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকার। এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন পর্যন্ত তাঁদের গ্রেফতার করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মতো সিবিআই তদন্ত চলবে। নিয়োগ তদন্তে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন গৌতম পাল।
প্রয়োজনে হেফাজতে নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে সিবিআই, এমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়।প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালকে এখনই গ্রেফতার করা যাবে না।
শুক্রবার এই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন সুপ্রিম কোর্ট জানায়, -‘ এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন পর্যন্ত গৌতম পালকে গ্রেফতার করা যাবে না। বড় পদক্ষেপ করা যাবে না পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকারের বিরুদ্ধেও’।আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়েছে, -‘ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে তাঁদের তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর হাতেই থাকবে তদন্তভার’।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালের আইনজীবী বলেন, -‘ এই দুর্নীতির প্রসঙ্গে তাঁর মক্কেল কোনও ভাবেই ওয়াকিবহাল নন। কারণ, গত বছর ২৪ অগাস্ট তাঁর মক্কেল পর্ষদের দায়িত্ব নেন’। আইনজীবীর এই বক্তব্য শোনার পরেই আদালত জানায়, -‘আপাতত গৌতমকে গ্রেফতার করা যাবে না’।প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল এবং ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ পাল কে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের করতে পারবে বলে জানিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি তাঁর রায়ে এও বলেছিলেন যে, -‘ প্রয়োজনে গৌতম ও পার্থকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারবে কেন্দ্রীয় সংস্থা’। কলকতা হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন পর্ষদ-সভাপতি।সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টে যান গৌতম পাল।
শুক্রবার সেই মামলার শুনানি চলে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোস ও বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর এজলাসে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, -‘আপাতত কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মতো শুধু তদন্ত করতে পারবে সিবিআই। আপাতত রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে তাঁকে’।প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে এদিন আইনজীবীর যুক্তি ছিল, -‘অতীতে যা যা ঘটেছে তার সঙ্গে বর্তমান পর্ষদল সভাপতি ও সচিবের কোনও সম্পর্ক নেই। ২০২২ সালের ২৪ অগস্ট পর্ষদের সভাপতি পদে যোগ দিয়েছিলেন গৌতম পাল। এরপর ডেপুটি সেক্রেটারি হিসাবে যোগ দেন পার্থ কর্মকার। যে সময় দুর্নীতি হয়েছে, তাঁরা কেউই সেই সময়ের পদাধিকারী নন’, বলেন আইনজীবী।তবে যাঁরা চাকরি পাননি, তাঁদের তরফে আইনজীবীর দাবি, -‘ মূল অভিযুক্ত জেলে থাকলেও যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ নথি এখনও পর্যন্ত বর্তমান সভাপতির দায়িত্বেই রয়েছে’। অর্থাত্ তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ইঙ্গিত দেন তিনি। যদিও এই বক্তব্য বিশেষ গুরুত্ব পায়নি। অন্যদিকে পর্ষদের তরফে আইনজীবী এদিন তুলে ধরেন, -‘সুপ্রিম কোর্টে মামলা বিচারাধীন থাকার পরও সিঙ্গেল বেঞ্চ প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপের কথা বলেছে’।