পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ‘ক্যাশ ফর কোয়েশ্চন’ বিতর্কে এথিক্স কমিটির বৈঠকে বৃহস্পতিবার হল তুমুল বাকবিতণ্ডা। মাঝপথেই এথিক্স কমিটির বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করেন মহুয়া মৈত্র সহ বিরোধী সাংসদরা। অমর্যাদাকর প্রশ্ন তোলার অভিযোগে সরব হয়েছেন তাঁরা।
ক্ষোভ উগরে তৃণমূলের কৃষ্ণনগরের সাংসদ বলেন, ‘জঘন্য সমস্ত প্রশ্ন করা হচ্ছে আমাকে। এটা একটা এথিক্স কমিটি?’ বিরোধীরা বলেন এথিক্স কমিটির বৈঠকে মহুয়াকে ‘ব্যক্তিগত এবং অনৈতিক’ প্রশ্ন করা হয়েছে। বৈঠকের মাঝপথে সেখান থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেন মহুয়া । ‘এটা কী ধরনের বৈঠক? ওঁরা নোংরা প্রশ্ন করছেন। বৈঠকে একজন মহিলার সঙ্গে অপমানজনক ব্যবহার করা হয়েছে।’ অভিযোগ বিএসপি সাংসদ দানিশ আলির ।
‘আমি কোন বন্ধুর সঙ্গে রাতে কতবার কথা বলি, কী কী কথা বলি, এসব জানতে চাইছে ওরা।’ অভিযোগ মহুয়ার।
সকাল ১১ টা থেকে নির্দিষ্ট সূচি অনুযায়ী এগোচ্ছিল এথিক্স কমিটির বৈঠক। হাজিরা দিতে সকাল ১০ টা ৫০ মিনিটেই পৌঁছে গিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। লাঞ্চ ব্রেকের আগে বৈঠকের পর ফের তা শেষের পরও জারি ছিল বৈঠক। কিন্তু দুপুর সাড়ে ৩ টে নাগাদ সওয়াল-জবাব পর্ব শুরু হতেই আপত্তি তোলেন বিরোধীরা। মহুয়া সহ বিরোধী সাংসদদের অভিযোগ, একজন মহিলাকে অপমানজনক বিভিন্ন প্রশ্ন করা হচ্ছে। অভিযোগ তোলা হয় এথিক্স কমিটির বিজেপি-সদস্যদের ও চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকরের বিরুদ্ধে। যার পরই তুমুল ক্ষোভ উগরে দিয়ে বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করে বেরিয়ে যান মহুয়া সহ বিরোধী সাংসদরা।
সূত্রের খবর এথিক্স কমিটি মহুয়ার কাছে জানতে চেয়েছিল তিনি কি তাঁর পাসওয়ার্ড কাউকে দিয়েছিলেন? এই বিষয়ে কি কিছু তিনি জানতেন? শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কী? তাঁর সঙ্গে কখন এই শিল্পপতির আলাপ হয়েছিল? সেই বিষয়েও জানতে চাওয়া হয় বলে খবর। মহুয়ার অভিযোগ, বৈঠকে তিনি গালে হাত রেখেছিলেন। তা নিয়েও ‘বাজে’ কথা বলা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘ওঁরা সব কিছুই ধরছিলেন। বাজে কথা বলছিলেন। ওঁরা বলেন, ‘আপনার চোখে জল’। আমার চোখে কি জল? আপনারা তো দেখতে পারছেন?’ সাংবাদিকদের বলেন নেত্রী। মহুয়ার ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগরের সাংসদ এথিক্স কমিটিকে জানিয়েছেন, ‘ব্যক্তিগত সম্পর্কের তিক্ততা’ থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্যবসায়ী হীরানন্দানির থেকে টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন তিনি। সেই প্রশ্নের নিশানায় ছিলেন শিল্পপতি গৌতম আদানি। অনেক সময়ই মহুয়া নিশানা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে। মহুয়ার আরও অভিযোগ, সংসদে কেন্দ্রীয় শাসকদলের যে গরিষ্ঠতা রয়েছে তার অপব্যবহার করছে তারা। স্পিকারকে দেওয়া চিঠিতে অবশ্য মহুয়া লিখেছেন, এথিক্স কমিটি কোনও ফৌজদারি বিষয়ে তদন্ত করতে পারে না। অভিযুক্ত মহুয়া এবং এথিক্স কমিটির বিরোধী সদস্যেরা এথিক্স কমিটির বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসার পরে ফের খোঁচা দিলেন অভিযোগকারী বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে।
তিনি বলেন, ‘মহুয়া আমার বিরুদ্ধে ভুল বার্তা ছড়াতে চাইছেন। বিরোধী সাংসদেরা এক জন অনগ্রসর নেতার এথিক্স কমিটির নেতৃত্ব দেওয়ায় অসন্তুষ্ট। তাই এমনটা করেছেন।’