পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ ‘নিউজ ক্লিক’-এর প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক প্রবীর পুরকায়স্থ ও নিউজ পোর্টালটির এইচআর বিভাগের প্রধান অমিত চক্রবর্তীকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিল্লির এক আদালত তাঁদের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। ইউএপিএ আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল।
পুলিশের বক্তব্য, নিউজ পোর্টালটি চিনের হয়ে প্রচার চালানোর জন্য অর্থ নিয়েছিল। দিল্লি পুলিশের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার তাঁদের আদালতে তোলা হয়। বিশেষ বিচারক হরদীপ কৌর উভয় অভিযুক্তকে ফের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে ২৫ অক্টোবর আদালত দুই অভিযুক্তকে দ্বিতীয়বারের জন্য সিটি পুলিশের হেফাজতে পাঠিয়েছিল। এর আগে দিল্লি হাইকোর্টও জানিয়ে দিয়েছিল এই দুই সাংবাদিকের গ্রেফতারি ও পুলিশ হেফাজতের যে নির্দেশ নিম্ন আদালত দিয়েছে তাতে তারা হস্তক্ষেপ করার মতো কিছু দেখছে না। এরপর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই দুই সাংবাদিক। সুপ্রিম মামলাটি গ্রহণ করলেও এখনও কোনও রায় দেয়নি।
উল্লেখ্য, ৩ অক্টোবর দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল প্রবীর ও অমিতকে গ্রেফতার করেছিল। ১০ অক্টোবর তাদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়। পুলিশ অবশ্য ২৫ অক্টোবর তাদের নতুন করে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে এফআইআর হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, নিউজ পোর্টালটি চিনের থেকে অর্থ নিয়েছিল ভারতের সার্বভৌমত্বকে ব্যাহত করতে ও দেশের বিরুদ্ধে অসন্তোষ সৃষ্টি করতে। এই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বানচাল করতে ‘পিপলস অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড সেক্যুলারিজম’ নামে একটি গোষ্ঠীর সাথে হাত মিলিয়ে ‘ষড়যন্ত্র’ করেছিল। সংস্থার বিরুদ্ধে চিন সহ নানা বিদেশি সংস্থার থেকে টাকা নিয়ে ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগের পাশাপশি আমেরিকার থেকে বেআইনিও অর্থ সাহায্য পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই অর্থ সাহায্য করা হয় বলে দাবি সিবিআইয়ের। যদিও অর্থের বিনিময়ে চিনের হয়ে প্রচারের যে অভিযোগ উঠেছে, তা অস্বীকার করেছ নিউজ ক্লিক। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনওভাবেই চিনের হয়ে কোনও প্রচার করা হয়নি বলেও তারা জানিয়েছে।
যদিও বিশেষজ্ঞ মহল বলছে, স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমকে ভয় পায় মোদি সরকার। নিউজ ক্লিকের মুখ বন্ধ করতে এসব করা হচ্ছে। ঠিক যেভাবে গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে বিবিসি’র করা তথ্যচিত্রের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কেন্দ্র। ট্যুইটার, ইউটিউব থেকে লিঙ্ক সরাতে বলে কেন্দ্র। সেইমতো লিঙ্ক সরিয়ে নিয়েও রেহাই পায়নি বিবিসি। দিল্লি ও মুম্বইয়ে বিবিসির অফিসে হানা দেয় আয়কর দফতর।