রেজাউল করিম– কালিয়াচক চোখের সামনে তিল তিল করে গড়া স্কুল গঙ্গাবক্ষে তলিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায়। মুছে যাবে ৬৬ বছরের ইতিহাস। গঙ্গা যেভাবে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে– তাতে আতঙ্কিত স্কুলের পড়ুয়া থেকে অভিভাবক– শিক্ষক-শিক্ষারাও। ইতিমধ্যে স্কুলের দক্ষিণ দিকের সীমানা প্রাচীরের কিছু অংশ তলিয়ে গিয়েছে গঙ্গায়। যে তীব্র গতিতে ভাঙন হচ্ছে– তাতে যে কোনও সময় গঙ্গা গিলে নিতে পারে পুরো স্কুলটি। স্কুলের নথিপত্র থেকে শুরু করে আলমারি– সিলিং ফ্যানসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে হাত বাড়িয়েছেন প্রাক্তন পড়ুয়ারাও
জানা গিয়েছে– কালিয়াচক-৩ ব্লকের বীরনগর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের এই বীরনগর হাইস্কুলের পথচলা শুরু ১৯৫৫ সালে। ৩ হাজার ২০০ পড়ুয়া শিক্ষক-শিক্ষিকা ২৯ জন। অশিক্ষক কর্মচারি ৪ জন। দোতলা মূল স্কুল ভবনটিতে মোট ১৫টি ঘর রয়েছে। স্কুলের মূল ভবনের দক্ষিণ দিকে রয়েছে স্কুলের বি-ব্লক। ২০১৬ সালে ব্যাপক ভাঙন শুরু হলে দুর্গতরা এখানে আশ্রয় নেন। তাদের মধ্যে কিছু পরিবার গত বছর অন্যত্র চলে গিয়েছেন। বাকি ২০ পরিবার এখানেই ছিলেন রবিবার পর্যন্ত। তবে রবিবারের ভয়াল ভাঙনে স্কুলের বি-ব্লকের ৪০ ফুট মতো সীমানা প্রাচীর তলিয়ে গিয়েছে গঙ্গায়। গোটা স্কুল যে কোনও মুহূর্তে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসেন বলেন– ‘এতদিনের ইতিহাস বিলীন হতে চলেছে। তিল তিল করে গড়া স্কুল চোখের সামনে ধ্বংস হতে দেখতে হচ্ছে। কারোরই কিছু করার নেই। আমরা আপাতত স্কুলের সামগ্রী অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমাদের সঙ্গে প্রাক্তন ছাত্ররাও হাত লাগিয়েছে।’