পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ চরমে। মঙ্গলবার গাজার সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে ধারবাহিক হামলা চালিয়েছে ইহুদি সেনা। ভয়াবহ এই হামলাতেই আল জাজিরার এক প্রকৌশলীর পরিবারের ১৯ সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ওই আল জাজিরা কর্মীর বাবা ও দুই বোনও রয়েছেন। শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট হামলায় শিবিরের অধিকাংশ মানুষ ‘শহিদ’ হয়েছেন। চ্যানেলের সম্প্রচার প্রকৌশলী খোদ মুহাম্মদ আবু আল-কুমসান ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার বিবৃতি জারি করে ইহুদি বাহিনীর এই হামলাকে ‘গণহত্যা’ এবং ‘ক্ষমার অযোগ্য কাজ’ বলে নিন্দা জানিয়েছে আল জাজিরা। বিবৃতিতে আরও বলেছে , ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ আবু আল-কুমসানের পরিবারের ১৯ সদস্য নিহত হয়েছেন। এই হামলায় মুহাম্মদের বাবা, দুই বোন, আট ভাগ্নে এবং ভাতিজি, তার ভাই, তার ভাইয়ের স্ত্রী এবং তাদের চার সন্তান, তার ভগ্নিপতি এবং এক চাচা নিহত হয়েছেন।’
উল্লেখ্য, গাজায় নিথর ৩,৫০০ শিশু। বেঁচে থাকা সন্তানদের গায়ে নাম লিখে রাখছেন মা-বাবারা। ইসরাইলি বোমার আঘাতে নিরন্তর কেঁপে উঠছে গাজা উপত্যকা। হত্যাকাণ্ডের পরিসংখ্যান অভাবনীয়। যার অর্ধেকেই ‘মাসুম বাচ্চা’। যে কোনও যুদ্ধে বরাবরই ‘সফট টার্গেট’ নারী, শিশু। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেও এত- সংখ্যক শিশু মারা যায়নি। যেই ‘কামাল’ করে দেখিয়েছে ইহুদি সেনা। যুদ্ধের কোনও সংবিধান বা নিয়ম নেই তা ক্ষণে ক্ষণে প্রমাণ করছে নেতানিয়াহু। গাজায় ‘দ্বিতীয় পর্ব’-এর যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। শনিবার এই মর্মেই হামাসকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ইহুদি প্রধান নেতানিয়াহু। সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযানের এই দ্বিতীয় অধ্যায়কে ইসরাইলের ‘অস্তিত্বের লড়াই’ আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, দ্বিতীয় পর্বের দু’টোই লক্ষ্য, হামাস’কে সম্পূর্ণ রুপে নিকেশ করা। দ্বিতীয় ইসরাইলি জিম্মিদের সহি-সালামাত দেশে ফিরিয়ে আনা। এরপর থেকেই আকাশ ও জলপথের পাশাপাশি স্থলপথেও ঝাঁপিয়ে পড়ে ইহুদি বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে ‘কারবালার-ময়দানে’ পরিণত হয়েছে উত্তর গাজা। চতুর্দিকে নিরলসভাবে বোমাবর্ষণ চলছে।
প্রসঙ্গত, রবিবার ভোররাতেও আকাশপথে গাজার সবথেকে বড় হাসপাতালের কাছে হামলা চালিয়েছিল ইসরাইল। হাজার হাজার গৃহহীণ ও আহত ফিলিস্তিনিদের বাস ছিল সেখানে। নেতানিয়াহু প্রশাসনের অবশ্য দাবি, ওই হাসপাতালের নীচেই রয়েছে মুজাহিদ হামাসের ঘাঁটি।