পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল কেরল পুলিশ। মঙ্গলবার পুলিশ জানিয়েছে, কোচির এর্নাকুলামে এক ধর্মীয় প্রার্থনা সভায় পরপর বিস্ফোরণের ঘটনা ও মাল্লাপুরম জেলায় একটি ফিলিস্তিন গোষ্ঠীর অনুষ্ঠানে হামাস নেতার ভার্চুয়াল বক্তব্য রাখার বিষয়ে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চন্দ্রশেখর কিছু মন্তব্য করেন। এই মন্তব্যের কারণেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এফআইআর নথিভুক্ত করেছে কেরল পুলিশ।
কোচি সিটি পুলিশের একজন পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩-র এ ধারা (ধর্ম, জাতি, জন্মস্থান, বাসস্থানের ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানো), কেরল পুলিশ আইনের ১২০-র শূন্য ধারায় (উপদ্রব এবং জনশৃঙ্খলা লঙ্ঘন) মামলা দায়ের হয়েছে।
গত ২৯ অক্টোবর কেরলের কালামাসেরিতে চলছিল খ্রিস্টানদের একটি গোষ্ঠী (যিহোবা)-র প্রার্থনাসভা। উপস্থিত ছিল কমপক্ষে ২২০০ লোক। হঠাৎই বিকট শব্দে পর পর তিনটে বিস্ফোরণ হয়। ১২ বছরের নাবালিকা সহ তিনজন নিহত হয়েছে। আহত প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন।
কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সমালোচনা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক্সে একটি পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘দুর্নীতির অভিযোগে ঘিরে থাকা একজন নিন্দিত মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের নোংরা নির্লজ্জ তুষ্টিকরণের রাজনীতির ফল। তিনি দিল্লিতে বসে ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন, আর কেরলে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী হামাসের জিহাদের জন্য খোলা আহ্বানে নিরীহ খ্রিস্টানদের উপর হামলা ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটছে’।
সোমবারই, কালামাসেরির ওই কনভেনশন সেন্টার পরিদর্শনে এসেছিলেন রাজীব চন্দ্রশেখর। সেখানেও তিনি মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে আক্রমণ করে ‘মিথ্যাবাদী’ বলেন। পরে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশেষ সম্প্রদায়ের উল্লেখ করিনি। আমি বিশেষভাবে হামাসের নাম উল্লেখ করেছিলাম। পিনারাই বিজয়ন চাইছেন হামাস আর সম্প্রদায়কে এক বলে গণ্য করতে’। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন নাম না করে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী একটি বিবৃতি দিয়েছেন যে আমি তুষ্টির রাজনীতিতে জড়িত, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি। আসলে যারা যারা বিষাক্ত, তারা বিষ থুতুই ফেলতে থাকবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা রাজ্যের মন্ত্রী যেই হোক না কেন, কেউ আইন লঙ্ঘনকারী বিবৃতি দিলে, তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।’
উল্লেখ্য, কোচির কালামাসেরির বিস্ফোরণের কয়েক ঘন্টা পরই ডমিনিক মার্টিন নামে এক ব্যক্তি হামলার দায় স্বীকার করে ত্রিশুর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তিনি ওই খ্রীষ্টিয় সম্প্রদায়েরই সদস্য বলে জানা গিয়েছে। সম্প্রদায়ের কর্মকাণ্ডে অসন্তুষ্ট হয়েই তিনি ওই হামলা চালিয়েছিলেন। পুলিশি জেরায় তার বক্তব্য, প্রার্থনা সভার সকলকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন তিনি।