পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ইসরাইলি-ফিলিস্তিনি যুদ্ধে বিপর্যস্ত গাজা। সাধারণ বেঁচে থাকার জন্য যে সামগ্রীগুলি প্রয়োজন আজ তা নেই। চতুর্দিকেই হাহাকার। এদিকে ত্রাণও পর্যাপ্ত ভাবে মিলছে না। গত তিন সপ্তাহ ধরে চলা যুদ্ধে এই মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি গাজা। এদিকে ইসরাইলি বাহিনী ক্লান্তিহীন বোমা বর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। গাজার দ্বিতীয় বৃহত্তম হাসপাতাল বোমা মেরে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ইসরাইল।
খাবার নেই, জল নেই, চিকিৎসার ন্যূনতম পরিষেবা নেই, এই অবস্থায় গাজার মানুষ কিভাবে নিঃশ্বাস নেবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। ক্ষুধার্ত মানুষ মরিয়া হয়ে ছুটে চলেছে রাষ্ট্রসংঘ পরিচালিত ত্রাণ শিবিরগুলিতে। এদিকে গাজায় গত ২৩ দিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়েছে। তাঁদের বেশির ভাগই মহিলা ও শিশু।
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর বড় পরিসরে চালানো স্থল অভিযানে এই উপত্যকার প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে আশ্রয় নেওয়া মানুষও হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন। আর বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ মানুষের না খেয়ে মরার অবস্থা হয়েছে।
রাষ্ট্রসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান সত্ত্বেও গাজায় যথেষ্টসংখ্যক ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না ইসরাইল। গতকাল ত্রাণবাহী মাত্র ১০টি ট্রাককে রাফাহ ক্রসিং হয়ে গাজায় ঢুকতে দেখা গেছে। এতে ওষুধ ও খাবার থাকলেও জ্বালানি ছিল না।
অবরুদ্ধ গাজার বাসিন্দারা ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল। সংঘাত শুরুর আগে সেখানে দিনে ৫০০ ট্রাক ত্রাণ সরবরাহ করা হত। অথচ ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা শুরুর পর এ পর্যন্ত মাত্র ৯৪ ট্রাক ত্রাণ গাজায় ঢুকেছে। ত্রাণ সরবরাহ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্রো।
এদিকে এই পরিস্থিতিতে জনগণকে দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা হবে দীর্ঘ ও কঠিনতম যুদ্ধ। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জিতব; আমরাই ঠিকে থাকব। আমরা লড়াই করে যাব; আমরা আত্মসমর্পণ করব না। আমরা সরে আসব না। সেটা স্থলভাগের ওপর কিংবা ভূগর্ভে (টানেল) হোক।’
এদিকে গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান নিয়ে নেতানিয়াহুর ঘোষণার পর প্রতিরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে হামাস। কাসাম ব্রিগেডসের মুখপাত্র আবু ওবায়দা বলেছেন, ‘আমরা এখনও তাঁর (নেতানিয়াহু) অপেক্ষায় আছি।’
হামাসের সামরিক শাখার মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আল্লাহর সাহায্যে আমরা তাঁকে পরাজয়ের স্বাদ দেব, যে পরাজয় হবে, তাঁর ধারণা ও শঙ্কার চেয়ে বড়।’