পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: লোকসভার আগে বিজেপিকে চাপে ফেলল বিহারের জাতগণনা রিপোর্ট। নীতিশ-লালুর সরকার ফের একবার বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতির ফানুস ফাটিয়ে দিল। স্বাভাবিকভাবেই প্রতিক্রিয়া দিতে ময়দানে নেমে পড়েছেন বিজেপির অন্যতম প্রচারক ‘নরেন্দ্র মোদি’। জাতগণনার রিপোর্ট সামনে আসার পর বিজেপি যে ধর্মকে ঢাল করবে তা আঁচ করা গিয়েছিল। সোমবার রাহুল গান্ধি জাতগণনা রিপোর্ট প্রসঙ্গে বলেছিলেন ‘যিতনি আবাদি উতনা হক’। এর প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবাদির কথাই যদি বলেন তবে প্রথম অধিকার কাদের হবে? দেশে কাদের জনসংখ্যা সবথেকে বেশি? কংগ্রেস এই বিষয়টি স্পষ্ট করে দিক। আবাদি দিয়েই কি সব অধিকার সুনিশ্চিত করা যাবে? তার মানে অল্প সংখ্যকদের কি কংগ্রেস তাড়াতে চাইছে? সব থেকে আবাদি যাদের তারা হল হিন্দু। সেক্ষেত্রে হিন্দুরা কি সব অধিকার নিয়ে নেবে?
পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলতেন, দেশের মধ্যে সম্পদের সবথেকে অধিকার রয়েছে সংখ্যালঘুদের। যাদের সংখ্যা সবথেকে কম। মুসলিমরাও সেই দলের অন্তর্ভুক্ত। আর কংগ্রেস বলছে, জনসংখ্যাই বলে দেবে কাদের অধিকার সবথেকে বেশি। মানে অল্প সংখ্যক যারা রয়েছেন তাদের অধিকার কী হবে!
মোদি কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে সরাসরি প্রশ্ন উত্থাপন করেন, হিন্দুদের সব দিয়ে দিলে, মুসলিমদের কি দেব? একাংশের মতে, সমাজে বঞ্চিত,নিম্ন বর্ণের মানুষের অধিকার প্রসঙ্গে দ্বিধায় পড়েছে বিজেপি। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী ফের একবার ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি শুরু করল মধ্যপ্রদেশের মাটি থেকে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদবও জাতগণনার এই উদ্যোগকে কার্যত ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেছেন। তবে মোদির দাবি এসব আইওয়াশ ছাড়া কিছু নয়।
জাতপাতের নামে দেশে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে বিরোধী শিবির। দরিদ্রদের অনুভূতি নিয়ে খেলা করছে ওরা। দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বিভাজনের খেলা খেলে চলেছে কংগ্রেস। আগেও তারা জাতির নামে দেশভাগ করেছে এবং আজও একই পাপ কাজ করছে। জাতপাতের নাম করে মানুষকে বিভাজন করছে তারা। আগে থেকেই বলছিলাম কংগ্রেস দলকে কংগ্রেসের লোক চালাচ্ছে না। বড় বড় নেতা মুখে তালা লাগিয়ে বসে রয়েছেন। ওদের জিজ্ঞাসাও করা হচ্ছে না আবার এসব দেখে তাঁরা বলার সাহসও রাখছেন না। ওদেরকে এমন লোক চালাচ্ছে, যারা দেশবিরোধী শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। কংগ্রেস যে কোনও মূল্যে দেশের হিন্দুদের মধ্যে বিভাজন করতে চাইছে। কংগ্রেস গরিবদের বিভাজন করতে চাইছে।
কিন্তু বিহারের জাতিভিত্তিক সমীক্ষায় ঠিক কী পাওয়া গেল? রাহুল গান্ধি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ওবিসি+ এসএসসি+ এসটি= ৮৪ শতাংশ। আর ৯০জন কেন্দ্রীয় সচিবের মধ্যে তিনজন ওবিসি। তাঁরা মাত্র ৫ শতাংশ ভারতীয় বাজেটকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। যদিও রাজনৈতিক মহলের অন্য অংশের বিশ্লেষণ, এই সমীক্ষার পর কিছুটা হলেও চাপে থাকবে গেরুয়া শিবির। গো-বলয়ের রাজনীতিতে জাতপাতের সমীকরণের তাৎপর্য অজানা নয়। জাতিভিত্তিক সমীক্ষায় হিন্দু-মুসলিম আসনের কথা উল্লেখ করলেও সমাজের পিছিয়ে পড়া জাতিদের আসন বিন্যাস বা অধিকার নিয়ে কোনও কথায় এদিন মোদির মুখে শোনা যায়নি।