পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ওরা তৃণমূলকে ভয় পেয়েছে। তাই ওরা ট্রেন বাতিল করে কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে আমাদের নেতৃত্বকে আটকানোর চেষ্টা করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে দিল্লির রাজপথ জুড়ে আগামী ২ এবং ৩ অক্টোবর প্রতিবাদ দৃপ্ত হবে।
মন্তব্য রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অরূপ রায়ের। শনিবার দুপুরে হাওড়া সদর তৃণমূল কংগ্রেসের কার্য্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে অরূপ রায় বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার প্রতি বঞ্চনা করছে।
১০০ দিনের মজুরির টাকা বন্ধ, আবাস যোজনার টাকা বন্ধ, বাংলা থেকে যে রেভিনিউ নিয়ে যাচ্ছে তার চল্লিশ শতাংশ টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র রাজ্যকে। প্রায় লক্ষ কোটি টাকা বাকি কেন্দ্রের কাছে। কিন্তু সেই আদায়ে আন্দোলনকে রুখে দিতে চাইছে কেন্দ্র। ট্রেনে সেখানে যেতে বাধা, রামলীলা ময়দানে আন্দোলনের পারমিশন দিচ্ছেনা।
কিন্তু এভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আটকানো যাবে না। এদিন অরূপ রায় আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ২.৬৫ কোটি জবকার্ড হোল্ডার রয়েছেন। এরা জীবন ও জীবিকার জন্য ১০০ দিনের কাজের উপর নির্ভরশীল। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য গত ২ বছর ধরে বিজেপি সরকার এদের টাকা আটকে রেখেছে।
২১ জুলাই স্থির হয় যে এর বিরুদ্ধে দিল্লিতে প্রতিবাদ হবে। দিল্লিতে তাঁদের অধিকারের জন্য লড়াই করতে চেয়ে সারা রাজ্য থেকে লোক এখানে এসেছেন। এরজন্য তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর একটি বিশেষ ট্রেন অগ্রিম সিকিউরিটি ডিপোজিট দিয়ে বুকিং করা হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি সরকার ভয়ে ট্রেন ছাড়ার কয়েক ঘন্টা আগে সেই ট্রেন বাতিল করে দিয়েছে।
এমন ঘটনা মোদি সরকারের প্রথম নয়, এর আগে দিল্লিতে ১ লক্ষ মানুষের জন্য অস্থায়ী শিবিরের অনুমতি প্রত্যাখ্যান করা, কৃষি ভবনের বাইরে বিক্ষোভের অনুমতি বাতিল, পঞ্চায়েত মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের বাড়ির বাইরে অবস্থান বিক্ষোভের অনুমতি প্রত্যাখ্যান সহ বিভিন্ন আন্দোলন হয় প্রত্যাখান, না হয় বাতিল করা হয়েছে।
একদিকে যখন ১,৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন সংসদ ভবন তৈরি করা হয়েছিল, ৮ হাজার কোটি টাকা দিয়ে ভিভিআইপিদের জন্য নতুন বিমান আনা হয়েছিল সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই বিজেপি সরকার আবাস যোজনা প্রকল্পের প্রায় ৮,১৪১ কোটি টাকা, ১০০ দিনের প্রকল্পের ৭ হাজার কোটি টাকা বকেয়া করে রেখেছে। শুধু তাই নয় রাস্তা, জল, মিড ডে মিল এবং সর্বশিক্ষা মিশনের জন্য টাকা বকেয়া রয়েছে। বিজেপি ভয় পেয়েছে।
সেইজন্য যেহেতু ৩ তারিখ দিল্লিতে কর্মসূচি আছে সেহেতু ওইদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডাকা হয়েছে। কার সঙ্গে কার সেটিং রয়েছে তা ২০২১ সালে দেখা গিয়েছে। ২০১৯ সালে দেখেছি বামেদের সব ভোট বিজেপির কাছে চলে গিয়েছে। যার ফলে এতগুলো সিট পেয়েছে। বামেদের ভোট বিজেপির দিকে চলে যাওয়ার কারণে তারা অনেক ভোট পেয়েছে যা আগে কখনও ছিল না।
কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাঁত হওয়ার পরও মাত্র ৭ হাজার ভোট পেয়েছে। সিপিএমের বাকি ভোট বিজেপির কাছে চলে গিয়েছে। এর থেকে প্রমাণ হয় বিজেপির সঙ্গে সিপিএমের কতটা সেটিং রিয়েছে। এই কারণে বাংলার মাটি থেকে সিপিএম নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। দল পয়সা দিয়ে ট্রেন ভাড়া নিয়েছিল। রেল পয়সা নেওয়ার পরেও সেই ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
এটা সম্পূর্ণ দ্বিচারিতা এবং এর থেকে প্রমাণিত হয় এরা তৃণমূলকে ভয় পেয়েছে। এই কারণে ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। এটা নির্বাচনের ইস্যু নয়। এটা গরিব মানুষের জন্য মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই। গরিব মানুষদের কেউ বঞ্চিত করলে তৃ্যণমূল কংগ্রেস এর বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে লড়াই করবে।
বাংলা থেকে যে রেভিনিউ আদায় করে নিয়ে যায় এর ৪০ শতাংশ টাকার অধিকার বাংলার। এরা বাংলার সরকারকে টাইট দিতে চাইছে, বিপদে ফেলতে চাইছে। কিন্তু এরা যত অপপ্রচার, কুৎসা করেছে বাংলার মানুষ ততো বেশি ভোট আমাদের দিয়েছে। ২০১১ সালের পর থেকে যতবার নির্বাচন হয়েছে তত বেশি আসন নিয়ে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। যত বিরোধীরা চক্রান্ত করবে ততো তৃণমূলের আসন সংখ্যা বাড়বে।