পারিজাত মোল্লা: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ফের কড়া নির্দেশ দিলেন এক ‘অমানবিক’ জেলা স্কুল পরিদর্শকের বিরুদ্ধে। এক শিক্ষিকার বদলি মামলায় ডিআই’কে অপসারণের নির্দেশ দিলেন হাইকোর্ট । আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে মুর্শিদাবাদের ডিআই’কে অপসারণ করার নির্দেশ শিক্ষা দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারিকে দেওয়া হয়েছে। এক শিক্ষিকার বদলি সংক্রান্ত মামলায় মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এদিন বিচারপতি বলেন, “ডিআই যে কাজ করেছেন, তা আদালত ভালো চোখে দেখছে না। ডিআই’কে পদ থেকে অপসারণ করতে হবে।” সঙ্গে বিচারপতি এটাও স্পষ্ট করে দেন, ‘অন্য দফতরে চাকরি করতে পারেন ডিআই’। তাঁর কড়া মন্তব্য, “এই পদে চাকরি করার যোগ্য তিনি নন।” এর পাশাপাশি আদালত মঙ্গলবার এটাও স্পষ্ট করে দেয়, ‘আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যেই মামলাকারীকে বাড়ির কাছের স্কুলে বদলি করতে হবে’। ৫ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিন রাজ্যকে নির্দেশ কার্যকরের বিষয়ে রিপোর্ট জমা করতে হবে।
আদালত সুত্রে প্রকাশ, মামলাকারী নদিয়ার শিক্ষিকা বনানী ঘোষ। তিনি মুর্শিদাবাদের স্কুলে কর্মরতা ছিলেন। বাড়ির কাছে বদলির আবেদন জানিয়ে আদালতের দারস্থ হন শিক্ষিকা। তাঁর আবেদন, ‘সন্তান জটিল রোগে আক্রান্ত। এবং স্বামীও বিশেষভাবে সক্ষম’। তাই বাড়ির কাছে বদলির আবেদন করেন ওই শিক্ষিকা। কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শিক্ষিকা। মুর্শিদাবাদের ওই স্কুলে কত শিক্ষিক আছেন? তা জানতে চেয়ে ডিআই-এর রিপোর্ট তলব করে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। শিক্ষকদের তালিকার সঙ্গে প্যারাটিচারের সংখ্যা যোগ করে রিপোর্ট দেন ডিআই। সেই রিপোর্ট দেখেই বিরক্ত হন বিচারপতি। কারণ ইতিমধ্যেই অন্য একটি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ রয়েছে, ‘বদলির ক্ষেত্রে টিচার ও প্যারাটিচারের সংখ্যা এক করা যাবে না’। এই ভুল রিপোর্ট দেওয়ার জন্যই ডিআই’কে পদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দেন তিনি।
আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে বনানী ঘোষকে বাড়ির কাছের স্কুলে বদলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবেদনকারী শিক্ষিকা বনানী ঘোষের আইনজীবী জানান, ‘ওই শিক্ষিকার সন্তান মাংসপেশী নামক বিরল রোগে আক্রান্ত। যে রোগে ধীরেধীরে মাংসপেশী শিথিল হয়ে পড়ে। এরফলে হার্ট এবং ফুসফুসের উপর তা প্রাণঘাতী প্রভাব ফেলে’। অথচ স্কুল পরিদর্শকের রিপোর্টে এই বিষয়টিই ঠিক ভাবে উল্লিখিত নয়। যা নিয়ে বেজায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী ৫ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।