বিশেষ প্রতিদিন: নিজেকে তরুণ রাখতে এত কিছু, যা শুনলে তাজ্জব বনে যেতে হয়। তবে মানুষের চিরকালের স্বাভাবিক প্রবণতা নিজেকে তরুণ রাখা। অনেকেই আছেন মাথায় বয়সের সঙ্গে পাকা চুল দেখা দিলেই হীনমন্যতায় ভুগতে থাকেন। চলচ্চিত্র জগতের বহু মানুষকে নিজেকে তরুণ রাখার ইচ্ছেয় প্লাস্টিক সার্জারির মতো অস্ত্রোপচারের সাহায্য নিতে দেখা গেছে।
এই রকমই একজন হলেন মার্কিন ধনকুবের, ক্যালিফোর্নিয়ার কোম্পানি বায়োটেকের সিইও ব্রায়ান জনসন।
নিজেকে তরুণ রাখতে বছরে প্রায় ২৩ কোটি টাকা খরচ করেন ব্রায়ান, প্রতিদিন ১১১টি ওষুধ খান। ব্রায়ানের কথায়, নিজেকে ১৮ বছর বয়সে ফিরিয়ে নিতে যেতে চাই। তার জন্য নানা ধরনের শারীরিক পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। ধনকুবেরের বয়স ৪৬ বছর। তাঁর শারীরিক দেখভালের জন্য সব সময় তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখেন চিকিৎসকেরা। প্রতিদিনই শরীরের চর্বি পরীক্ষা সহ রুটিন এমআরআই করার জন্য ৩০ জন চিকিৎসকের একটি বিশেষজ্ঞ দল রয়েছেন। তাঁরাই প্রতিদিন নিয়ম করে এমন কিছু রাসায়নিক তাঁর শরীরে প্রবেশ করাচ্ছেন, যাতে ব্রায়ানের বয়স কমতে থাকে।
সকালটাও তাঁর শুরু হয় অন্যরকম ভাবে। প্রতিদিন সকালে কোলাজেন, স্পার্মিডিন ও ক্রিয়েটিনের উপাদানসমৃদ্ধ স্মুদি পান করেন তিনি।
ব্রায়ান আরও জানান, তরুণ হওয়ার জন্য তিনি শারীরিক অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য তিনি শরীরে বিভিন্ন যন্ত্র ব্যবহার করেন। মাথায় বিশেষ একটি বেসবল ক্যাপ পরেন, যা তাঁর মাথার ত্বকে লাল আলো দেয়। ৪৬ বছরের ব্রায়ান নিজেকে ১৮ বছর বয়সের শরীরকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে নিজের কিশোর ছেলের সঙ্গে রক্তও বদল করেছেন ব্রায়ান। ছেলের শরীর থেকে ১ লিটার প্লাজমা নিয়েছেন।
প্রতিদিন ভোর ৫টায় ঘুম থেকে ওঠেন। প্রতিমাসে এমআরআই ও কোলনোস্কোপি করান। বয়স কমাতে বেলা ১১টায় ডিনার করেন। ঘড়ি ধরে ঘুমোতে যান। নিরামিষ খাবার খান। ঘুমনোর আগে পরেন নীল চশমা। টাইম রেস্ট্রিকটেড ইটিং। সারাদিনে ১,৯৭৭ ক্যালোরির বেশি খাবার খান না। সব খাবার খান সকাল ৬টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে। দাঁতের যত্ন নেন টি ট্রি অয়েল আর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট জেল দিয়ে।
বহু দিন ধরেই মানুষের বয়স কমানোর একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন ব্রায়ান এবং তাঁর প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পটির নাম ‘ব্লু প্রিন্ট’। নিজেদের প্রকল্পের পরীক্ষাগার হিসাবে নিজের শরীরকেই বেছেছেন ব্রায়ান।
ব্রায়ান জনসন জানিয়েছেন, তরুণ হওয়ার জন্য শারীরিক অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে তিনি শরীরে বিভিন্ন যন্ত্র ব্যবহার করেন। মাথায় বিশেষ একটি বেসবল ক্যাপ পরেন, যা তাঁর মাথার ত্বকে লাল আলো দেয়। নিজেই নিজের মলের নমুনা সংগ্রহ করেন। ব্রায়ান জনসন তাঁর পুরো শরীরকে বয়সরোধী অ্যালগরিদমে পরিণত করতে চান। যন্ত্রের সাহায্যে তিনি আধ ঘণ্টায় ২০ হাজার সিট আপ দিয়েছেন। তাঁর লক্ষ্য হল ৪৬ বছর বয়সী শরীর যেন ১৮ বছর বয়সী তরুণের শরীরের মতো কাজ করে।
মাত্র ৩০ বছর বয়সেই নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দেন ব্রায়ান।
সে সময় তিনি লেনদেন প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠান ব্রেইনট্রি পেমেন্ট সলিউশনস টু ইবে নগদে ৮০০ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেছিলেন। ধনকুবের ব্রায়ান বৈদ্যুতিক অডি গাড়ি নিজেই চালিয়ে যাতায়াত করেন। গাড়ি চালান ধীরগতিতে। লস অ্যাঞ্জেলেসের রাস্তায় তিনি ঘণ্টায় ১৬ মাইল গতিতে গাড়ি চালান।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে ধনকুবের ব্রায়ান জনসন নিজেকে একটি কঠিন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নিয়ে চলেছেন। যদি এই পরীক্ষায় সফল হন তিনি তাহলে বিশ্বের ইতিহাসে নজির গড়বেন ব্রায়ান জনসন। মৃত্যু এড়ানোও সম্ভব হতে পারে!