পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একাধিকবার বিভিন্ন জনসভা থেকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ঘুসপেটিয়াদের একটা একটা করে দেশ থেকে বিতাড়িত করবেন। মুসলিমদের নিশানা করেই যে তিনি এই মন্তব্য করেছিলেন তা বলাবাহুল্য। এদিকে আবার আরএসএস সুপ্রিমো মোহন ভাগবত সম্প্রতি নাগপুরে সংগঠনের সভায় বলেছিলেন, ভারতীয় মুসলিমদের বহিরাগত বলে মনে করে না সংঘ। এই পরিস্থিতিতে পদ্ম শিবিরে জোর জল্পনা, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের পরই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) রুল তৈরি করবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনে মূলত হিন্দু উদ্বাস্তুদের ভোট একতরফাভাবে নিজেদের ঝুলিতে পুরতে অমিত শাহর মন্ত্রকের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রথমে ২০১৪ ও পরে ২০১৯-দু’টো লোকসভা নির্বাচনেই বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দিল্লির মসনদে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওই দুই নির্বাচনেই বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল বিজেপি। সেইমতো ২০১৯ সালে মোদি সরকার সংসদের দু’কক্ষে পাশ করে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত অবশ্য সিএএ নিয়ে বিধি তৈরি করে উঠতে পারেনি শাহর মন্ত্রক। এ পর্যন্ত কম করে ৭বার সংসদীয় সচিবালয়ের কাছে সিএএ রুল তৈরির সময় চেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর তরফে দাবি করা হয়েছিল,করোনা মহামারির কারণে বিধি তৈরিতে বিলম্ব হচ্ছে। করোনা মিটলে সিএএ রুল তৈরি করা হবে। এখন করোনাপর্ব কার্যত অতীত। সামনেই আবার ৫ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। সেই ভোটে বিজেপি কেমন ফল করে তা দেখার পরই সিএএ নিয়ে বিধি তৈরির পথে হাঁটার কথা ভাবছে পদ্ম শিবির। সামনেই রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়, তেলঙ্গানা ও মিজোরামে ভোট। সেই ভোটপর্ব মিটে গেলে সিএএ-র রুল তৈরিতে হাত দেবে শাহর মন্ত্রক।
এই সিএএ আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, খ্রিস্টান ও পার্সিদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। শুধুমাত্র মুসলিম বাদে বাকি সব সম্প্রদায়ের মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এই সিএএ আইনে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সংসদের দু’কক্ষে এই বিল পাস করায় কেন্দ্র। যদিও এই সিএএ ও এনআরসি নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র আন্দোলন হয়েছিল। আলাদা করে নজর কেড়েছিল দিল্লির শাহিনবাগ আন্দোলন । অসম সহ উত্তর-পূর্বের একাধিক রাজ্যও এর বিরুদ্ধে পথে নেমেছিল। উত্তরপ্রদেশ সহ একাধিক বিজেপিশাসিত রাজ্যে আন্দোলনকারী মুসলিমদের বিপুল টাকা জরিমানা করা হয়। তাদের থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়।