পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সংসদ ভবনকে গণতন্ত্রের মন্দির বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সংসদ ভবনের সামনে তাঁর সাষ্টাঙ্গে প্রণাম ভাইরাল হয়েছিল। সেই ‘গণতন্ত্রের মন্দিরে’ এবার মবলিঞ্চিংয়ের মতো গুরুতর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করলেন হায়দরাবাদের সাংসদ তথা ‘মিম’ পার্টির প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।
পেহলু খান, আখলাক, তাবরেজ আনসারি, হাফিজ জুনেইদ, আফরাজুল খানদের পিটিয়ে হত্যার ঘটনা এখনও টাটকা। গোরক্ষার নামে খুনিবাহিনীরা শুধুমাত্র ‘সন্দেহের বশে’ এদের অনেককে হত্যা করেছে। এমনই নৃশংস ঘটনা ঘটতে পারে সংসদ ভবনেও, যেখানে দেশের জন্য আইন তৈরি হয়। সেই আশংকার কথাই হায়দরাবাদের এক জনসভায় ব্যক্ত করলেন ওয়াইসি।
সম্প্রতি সংসদে বিজেপি সাংসদ রমেশ বিদুরি নির্দ্বিধায় চিৎকার করে বহুজন সমাজ পার্টির মুসলিম সাংসদ দানিশ আলিকে ‘উগ্রবাদী’, ‘আতঙ্কবাদী’র তকমা দিয়ে দিয়েছিলেন। যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশের সংসদে যেখানে প্রধানমন্ত্রী সংবিধান হাতে প্রবেশ করেছিলেন, সেখানে শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার কারণে একজন সাংসদকে নির্বিচারে বিদ্বেষ-ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছিল তা নিয়ে পরে আক্ষেপ করে দানিশ বলেছিলেন, আসলে তাঁকে পিটিয়ে হত্যার প্লট তৈরির চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির।
সেই প্রেক্ষাপট থেকেই এবার ওয়াইসি নিশানা করেছেন বিজেপিকে। বলেছেন, ‘সেইদিন আর বেশি দূরে নেই, যখন একজন মুসলিমকে পার্লামেন্টে মবলিঞ্চিং করা হবে।’ মিম সুপ্রিমোর কথায়, ‘আমরা দেখেছি সংসদে একজন বিজেপি সাংসদ এক মুসলিম সাংসদকে গালিগালাজ করেছেন। জনগণ বলছে, সংসদে তাঁর এই ধরনের মন্তব্য করা উচিত হয়নি। তারা বলে ওঁর জিভে দোষ। কিন্তু, তিনি তো জনপ্রতিনিধি। আপনারাই তাঁকে ভোট দিয়েছেন। আমার কথা মনে রাখবেন। একদিন এমনও দিন আসবে যখন পার্লামেন্টে একজন মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হবে। সেই দিন বেশি দূরে নয়।’
এছাড়াও যেভাবে হরিয়ানার নূহ্তে বেছে বেছে মুসলিমদের বাড়িতে বুলডোজার চালানো হয়েছে তা নিয়েও সরব হন ওয়াইসি। তিনি বলেন, আইন না মেনেই এই কাজ করা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কোথায় গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ, সব কা বিশ্বাস’ স্লোগান? নরেন্দ্র মোদি কি তাঁর সাংসদের এই ভাষণ আরবি ভাষায় অনুবাদ করে তাঁর বন্ধু আরব আমিরাতের মুহাম্মদ বিন জায়েদের কাছে পাঠাবেন?
হরিয়ানায় গো-রক্ষকদের হাতে নাসির, জুনেইদদের মতো যখন লিঞ্চিংয়ের ঘটনা ঘটে তখন প্রধানমন্ত্রী নীরব থাকেন। ভোট পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশে গৃণার পরিবেশ তৈরি করছেন।’’