পারিজাত মোল্লা: জেল হেফাজতে থাকা অনুব্রত মন্ডল এখনও চাপা আতঙ্কের কারণ এক মানবাধিকার কর্মীর কাছে! গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মন্ডল বর্তমানে দিল্লির তিহার জেলে বন্দি। রাজ্য রাজনীতিতে বিশেষত বীরভূমের মাটিতে তাঁর গুরুত্বও কমেছে অনেকখানি। তবুও কাটেনি আতঙ্ক।
জীবন সংশয়ে ভুগছেন এক মানবাধিকার কর্মী। ওই মানবাধিকার কর্মীর নাম সঙ্গীতা চক্রবর্তী। দাবি, -‘ আবাস যোজনা থেকে ১০০ দিনের কাজ, জল যোজনার মতো প্রকল্পের পাশাপাশি দরিদ্র অসহায় মানুষের একাধিক দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য আন্দোলন করেছিলেন। সেই জন্য তাকে অত্যাচারও সহ্য করতে হয়েছে। অনুব্রত মণ্ডলের লোকেদের হাতে বেধড়ক মার খেতে হয়েছে। তার দোকান লুঠ করা হয়েছে। নির্মমভাবে মারার পর তাকে জঙ্গলে আধমরা অবস্থায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল। অনুব্রত মণ্ডল বর্তমানে রাজ্যে সেই ঠিকই, কিন্তু তাঁর আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে। তিনি রীতিমতো জীবন সংশয়ে ভুগছেন’। এমতাবস্থায় আদালতের কড়া নাড়লেন সঙ্গীতা নামে ওই মানবাধিকার কর্মী। অভিযোগকারী আরও বলেন, -‘ অনুব্রত মণ্ডল বর্তমানে রাজ্যে না থাকলেও আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না’। এমনকী তিনি রীতিমতো জীবন সংশয়ে ভুগছেন বলেও জানান।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে চলে জনস্বার্থ মামলার শুনানি। সেখানেই এমন দাবি করেছেন ওই মানবাধিকার কর্মী। তাঁর আরও অভিযোগ, -‘ গরিব মানুষের অধিকার আদায়ে তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অন্তত ২২ হাজার বার আবেদন করেছেন। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণেই সমস্ত আবেদন নাকচ করে দেওয়া হচ্ছে’। হাইকোর্টের কাছে তাঁর প্রশ্ন, “এই ঘটনার পিছনে বীরভূমের দাপুটে নেতার হাত নেই তো?”
এই আতঙ্কের কথা জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করতে চেয়েছিলেন ওই মানবাধিকার কর্মী। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য এদিন জানিয়েছে, -‘ এই বিষয়টি জনস্বার্থ মামলা হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়’।
প্রাণ সংশয়ের বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে তাঁকে উচ্চ আদালতের উপযুক্ত বেঞ্চের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এখন দেখার ওই মানবাধিকার কর্মী হাইকোর্টের অন্য বেঞ্চের দারস্থ হন কিনা?
অপরদিকে অনুব্রত মন্ডলের অনুগামীদের একাংশ দাবি করছেন যে, অতি সম্প্রতি গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মন্ডলের হিসাবরক্ষকের জামিন মিলেছে, যা পরবর্তীতে অনুব্রতের পক্ষে জামিন পেতে সহায়ক। ওই মানবাধিকার কর্মী রাজনৈতিক কোন প্ররোচনায় এই পরিস্থিতিতে এই ধরনের অভিযোগ এনে অনুব্রতের জামিন পাওয়া দুষ্কর করতে চাইছেন’।