আবদুদ ওদুদ: গত কয়েকদিন ধরে আকাশের মুখভার। ইলসেগুঁড়ি বৃষ্টিতে নাজেহাল শহরবাসী। তার সঙ্গে রয়েছে ভ্যাপসা গরমও। এই পরিস্থিতিতে শহরে শুরু হয়েছে আসন্ন পুজোর কেনাকাটা। উৎসবপ্রিয় বাঙালিদের কাছে রয়েছে মাত্র তিন সপ্তাহ। তার পরই পড়বে ঢাকে কাঠি। উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রত্যেক বাঙালি থাকেন সাজসাজ রবে। কিন্তু আকাশের মুখ ভারের জন্য কেনাকাটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক ক্রেতা। রবিবার ছিল ছুটির দিন অনেকে ভেবে ছিলেন পুজোর আগে কেনা-কাটা সারবেন।
কিন্তু রবিবারও কলকাতার সব থেকে ব্যস্ত এলাকা নিউমার্কেট চত্বরে ফুটপাথে ভিড় থাকলেও, নিউ মার্কেটের দোকানগুলি অধিকাংশই ফাঁকা। বিভিন্ন শপিংমল থেকে শুরু করে জুতোর দোকানে তেমন ভিড় নেই বললেই চলে। ফুটপাথ এলাকায় যথেষ্ট ভিড় থাকলে দোকানদারদের মধ্যে অনেকটাই হতাশার ছাপ। দেখা গিয়েছে অনেক সময় কলকাতা লাগোয়া সহ হাওড়া, হুগলি, বারুইপুর, ব্যারাকপুর, নৈহাটি এমনকি রানাঘাট, কৃষ্ণনগর থেকেও পুজোর কেনা-কাটা করতে এসেছেন নিউ মার্কেটে। কিন্তু এখন কিছু ক্রেতা এলেও আগের মতো দেখা যায় না। আবার দেখা গিয়েছে উলুবেড়িয়া, বাগনান কিংবা বজবজ থেকে মানুষ এসেছেন এই নিউ মার্কেটে।
পুজোর কেনাকাটা প্রসঙ্গে নিউমার্কেটের এক ব্যবসায়ী ইমরান সেখ বলেন, প্রতি বছরই নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করেন এবার হয়তো পুজোর বাজার জমে উঠবে। কিন্তু কোথায়? দোকানে চার-পাঁচজন কর্মচারী রয়েছেন তাঁরাও হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন। দোকানের মাসিক ভাড়া দেবেন বা কর্মচারীদের বেতন দেবেন কিনারা করতে পারছেন না। তিনি বলেন, এখন দোকান খুললেই খরচ। সেই তুলনায় বেচা-কেনা নেই। ফলে অনেকটাই হতাশ ব্যবসায়ীরা। তার উপর শুরু হয়েছে বৃষ্টি। যাও কিছু ক্রেতা কেনা-কাটার জন্য আসেন বর্ষার কারনে তাঁরাও আসছেন না। ফলে রবিবারের বাজার একেবারে তলানিতে ঠেকেছে।
মণ্ডলগ্রুপের এক কর্মকর্তা বলেন, পুজোর বাজার যে সেটা মনেই হচ্ছে না। ক্রেতা এলেও তা খুবই সামান্য। পুজোর আগে মানুষ হয়তো আর তিনটে রবিবার পাবেন। কিন্তু ক্রেতা না থাকায় তাঁরাও হতাশ।
বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে উলুবেড়িয়া থেকে বাজার করতে এসেছে পিয়ালি মাইতি। ঝির-ঝিরে বৃষ্টিতে দুই সন্তানকে নিয়েই নাজেহাল, তবুও পরিবারের জন্য নতুন পোশাক কিনতে ব্যস্ত। পিয়ালি মাইতি জানান ভেবে ছিলাম এবার পুজোর বাজার নিউ মার্কেটে করব না। তবুও প্রতিবছরের টানে হাজির হয়েছেন কিন্তু এত বৃষ্টি হবে ভাবেননি।
নিউ মার্কেটের বাইরে ভিড়কে উপেক্ষা করেই কিছুটা কেনা-কাটা করেছেন মার্কেটের ভেতরে। এখন সন্তান ও পুত্রকে নিয়ে ধর্মতলায় বাস ধরে উলুবেড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। অন্যদিকে, হুগলির শ্রীরামপুর থেকে দেবীকা মজুমদার এসেছেন পুজোর কেনা-কাটা করতে। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর স্বামী। তাঁরাও বৃষ্টিয়ে ভিজে গিয়েছেন। ছুটির দিন পেয়ে কেনা-কাটা করতে এসেও বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ায় অনেকটাই অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন।