পারিজাত মোল্লা: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ধাক্কা খেল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ৫০ লক্ষের জরিমানা নির্দেশটি।
তবে তদন্তকারী সংস্থা অপরিবর্তিত রইলো ডিভিশন বেঞ্চেও। আলিপুরদুয়ারের সমবায় দুর্নীতির তদন্তে গাফিলতির জন্য সিআইডিকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিলেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ।
বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ স্থগিতাদেশ জারি করেছে।
সমবায় দুর্নীতিতে রাজ্যকে তীব্র ভর্ত্সনা করেছিলেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। কেন সিআইডি, সিবিআইয়ের হাতে তদন্তের নথি তুলে দেয়নি? সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি । সেই অভিযোগে রাজ্যকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার সেই নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ।
প্রসঙ্গত , আলিপুরদুয়ারে একটি সমবায় সমিতিতে ৫০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। গত ২৪ অগস্ট বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি হিসাবে এই দুর্নীতি তদন্তে একযোগে সিবিআই ও ইডিকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, সিআইডি এখনও তদন্ত সংক্রান্ত কোনও তথ্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দেয়নি।গত শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য। বিচারপতি বলেন, -‘ গরিবের টাকা মেরে আপনারা ছেলেখেলা করছেন? কারা এই টাকা নিয়েছে সিআইডি এতদিনেও জানে না। কিন্তু আমি জানি। আপনারা তদন্ত করছেন না উল্টে আবার পুরনো নির্দেশ পুনর্বিবেচনা জানানোর আর্জি জানিয়েছেন’।
তারপরই রাজ্যকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করার নির্দেশ দেন। বিচারপতির আরও নির্দেশ ছিল, সিআইডির কাছ থেকে সিবিআই এর হাতে তদন্তভার ৩ দিনের মধ্যে তুলে দিতে হবে। তার পর ৩ দিনের মধ্যে এই তদন্ত শুরু করতে হবে সিবিআইকে। সেই সঙ্গে তদন্ত শুরু করতে ইডিকেও।
আদালতের নির্দেশ কার্যকর না হলে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে তলব করা হবে বলেও জানান বিচারপতি।বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে রাজ্য। মঙ্গলবার বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানিতে রাজ্যের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের ওপর আংশিক স্থগিতাদেশ দেয়। ডিভিশন বেঞ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিল। তবে সিবিআই-ইডি তদন্তের ওপর কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। এতে অস্বস্তি রইলো রাজ্যের।