সুবিদ আবদুল্লাহঃ গঙ্গার বাঁধভাঙা বন্যায় ডুবেছে ভুতনির গদাই গ্রাম। ঘরবাড়ি ছেড়ে– ভিটেমাটি ছেড়ে ২৫০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে নদী বাঁধে। অস্থায়ী এই ঠিকানায় দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছেন অসহায় পরিবারগুলো। স্থানীয় হিরানন্দপুর পঞ্চায়েত থেকে ত্রাণের ত্রিপল মিলেছে। কিন্তু খাবার নেই– অভাব পানীয় জলের।
মধ্য শরতেও চাঁদিফাটা রোদের তেজ। এমন এক আবহাওয়ায় মাথা থেকে দুই ফুট উপরে টাঙানো ত্রিপল। বদ্ধ তাঁবু। ছায়াটুকুও নেই। কোলে কচি বাচ্চা। গরমের তেজে তার কান্না থামছে না। নিরুপায় অবনী মাহাতো কি করবে? বাচ্চাকে থামাতে না পেরে নিজেই অঝোরে কাঁদছেন। এমনই চিত্র ২৫০ পরিবারের প্রায় প্রত্যেকটি তাঁবুতে। ২০০ তাঁবুতে ছোটো ছোটো বাচ্চা রয়েছে। অবনীর পাশে দাঁড়িয়ে বললেন নীতেশ মণ্ডল।
রাজনৈতিক কর্মী হলেও মানুষের দুঃখকষ্টের সঙ্গে রাজনীতি করায় নীতেশের ঘোর আপত্তি। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি জানান– সম্প্রতি কলকাতা থেকে রাজনৈতিক নেতারা এসে দেখে গেছেন দুর্গতদের। সুরাহার কিছু হয়নি। অবনী– মীরা– কাকলী মাহাতোদের অভিযোগ– নেতারা আসছেন। ছবি তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। দু’মাস ধরে আড়াইশো তাঁবুর বাসিন্দা মানুষগুলোর কিন্তু কান্না থামছে না।
বাড়ির পুরুষরা কোথায়? জানতে চাই অবনীর কাছে। অবনী জানায়– গঙ্গায় মাছ মারতে গেছে। বাজারে সেই মাছ বিক্রি করে। ইদানিং তাও আর হচ্ছে না। মানুষের হাতে টাকা নেই। ফলে রান্নার চাল– ডাল– তরিতরকারি কেনা যাচ্ছে না। অধিকাংশ তাঁবুতে রান্নার হাঁড়িই চড়ছে না। আমরা অনাহারে থাকতে পারি বাবু– কিন্তু বাচ্চাগুলোকে বাঁচাব কেমন করে? উত্তর দেয় অবনী।
এ ব্যাপারে পঞ্চায়েত প্রধান বিউটি খাতুন জানান– গদাই অন্য পঞ্চায়েতের অধীন। তবুও সাধ্যমত ত্রাণ দিয়েছি আমরা। ভুতনিও ভেসেছে। তাদের ত্রাণ দেওয়াটা কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। আমাদের পঞ্চায়েত মাহাতোদের পাশে আছে। আমরা চেষ্টা করছি পরিস্থিতির উন্নতির দিকে নজর রাখতে।