পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: গরিব-মধ্যবিত্তদের কপালে ভাঁজ। রেকর্ড বাড়ল মুদ্রাস্ফীতি। যা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সহনশীল সীমা বা লক্ষ্যসীমাকেও (২-৬ শতাংশ) ছাপিয়ে গিয়েছে। বছরের পর বছর মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে। গত বছর জুনে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৪.৮৭ শতাংশ। চলতি বছরের জুলাইয়ে তা বেড়ে হয়েছে ৭.৪৪ শতাংশ। যা গত ১৫ মাসে সর্বোচ্চ। সোমবার ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিস (এনএসও) বা জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এমনটা জানানো হয়েছে।
মূলত টমেটো ও অন্যান্য শাক-সবজি সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মুদ্রাস্ফীতির এই উল্কাগতি বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, ২০২২ সালের এপ্রিলে মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ ৭.৭৯ শতাংশ বেড়েছিল। বিশেষজ্ঞদের আশংকা, এই প্রবণতা চলতে থাকলে গত বছরের এপ্রিলের এই শিখর-ছোঁয়া রেকর্ডও ভেঙে যাবে।
এনএসও-র তথ্যে আরও বলা হয়েছে, খাদ্য সম্ভারের নিরিখে এই মুদ্রাস্ফীতি চলতি বছরের জুলাইতে বেড়ে হয়েছে ১১.৫১ শতাংশ। গত বছর জুনে যা ছিল ৬.৬৯ শতাংশ। আর শাক-সবজির ক্ষেত্রে বছরের পর বছর (ইয়ার ওভার ইয়ার) ভিত্তিতে মুদ্রাস্ফীতি ৩৭.৪৩ শতাংশ। অর্থাৎ, এক বছর আগে যে সবজির দাম ছিল ১০০ টাকা এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৩৭.৪৩ টাকা। শক্তিকান্ত দাস বলেন, বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি সাপ্লাই-সাইডের মাধ্যমে প্রভাবিত হচ্ছে। তবে এখনও মুদ্রানীতি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এখন বিশেষজ্ঞদের মত হল, মুদ্রাস্ফীতির এই বাড়বাড়ন্ত শুধু সাধারণ গরিব বা মধ্যবিত্তকে নয় ব্যবসা-বাণিজ্যেও ধাক্কা দেয়। খাদ্য, উৎপাদিত পণ্য ও পরিষেবার মূল্য বৃদ্ধি করে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মুদ্রাস্ফীতি বেশি হওয়ার আশংকা করলে তাঁরা অনেকক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিকল্পনাও পিছিয়ে দেন। সেক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়ে ভারতীয় অর্থনীতিতে।
তাছাড়া মুদ্রাস্ফীতি বাড়লে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রেপো রেট বাড়ানোর প্রবণতাও দেখা যায়। যদিও চলতি বছরের জুন মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তারা এখনই রেপো রেট বাড়াচ্ছে না। ফলে ঋণ গ্রহণকারী আম জনতা কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রয়েছে। তবে এই হারে মুদ্রাস্ফাতি বাড়তে থাকলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট বাড়ালে সমস্যায় পড়তে হবে তাদের। গ্রামীণ ক্ষেত্রে এই মুoাস্ফীতি চলতি বছরের জুলাইতে বেড়ে হয়েছে ৭.৬৩ শতাংশ। গত বছরের জুলাইতে তা ছিল ৪.৭৮ শতাংশ। অন্যদিকে শহরের ক্ষেত্রে গত বছর জুলাইতে ছিল ৪.৭৮ শতাংশ। চলতি বছরের জুলাইতে তা দাঁড়িয়েছে ৭.২০ শতাংশ। এমনিতেই এখন টম্যাটোর দাম আকাশছোঁয়া। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আনাজের দাম। তারউপর, এই বিপুল মুদ্রাস্ফীতির জেরে গরিব-মধ্যবিত্তের হেঁসেলে চাপ আরও বাড়বে।