পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ‘রামরাজ্যে’ই সব চেয়ে কষ্টে রয়েছেন দলিত, তফসিলি জাতিরা! অভিযোগ বিরোধীদের। শুধু দেশের সর্বাধিক জনবসতিপূর্ণ রাজ্যে নয়, সমগ্র গোবলয়েই বেশ সংকটে রয়েছেন সমাজের অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষরা। ‘সব কা সাথ, সাব কা বিকাশ’-এর কথা বললেও দেশজুড়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দলিত, তফসিলি জাতি-উপজাতিদের উপর নিগ্রহ, অত্যাচার। তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ডাবল ইঞ্জিন সরকারের অধীনস্থ রাজ্যগুলি। বিজেপি শাসিত যোগীরাজ্যে এমনই এক অত্যাচারের ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল সাইটে। বিনা পয়সায় মাংস দিতে অস্বীকার করায় দলিত ব্যক্তিকে জুতো-পেটা একদল মদ্যপ যুবকের।
জানা গিয়েছে, ওই দলিত মাংস বিক্রেতার নাম সুজন আহিরওয়ার। ললিতপুর জেলার নানা গ্রামে ঘুরে ঘুরে মুরগির মাংস বিক্রি করেন তিনি। এদিন আরও পাঁচ জনের মতো ওই মদ্যপ ব্যক্তিদের মাংস দেন সুজন। তারপরে মাংস দাম বাবাদ টাকা চাইতেই ঘটে বিপত্তি। সাফ জানিয়ে দেয়, মাংসের কোনও দাম তারা দেবে না। ঘটনার প্রতিবাদ জানালে ‘পায়ের চপ্পল’ খুলে সুজনকে বেধড়ক মারধর করে ওই মদ্যপ ব্যক্তিরা। এক পথচারি ওই ভিডিয়ো করে। পরে তা ভাইরাল হয়। খবর প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে যোগীরাজ্যের পুলিশ। তফসিলি জাতির বিরুদ্ধে অন্যায়ের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে এখনও কেউ আটক হয়নি।
আগেও সেই রাজ্যে একাধিকবার দলিতদর ওপর এই রকম অত্যাচারের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। গত মাসেই সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সোনভদ্র জেলায়, বিদ্যুৎ দফতরের এক অস্থায়ী দলিত শ্রেণির কর্মীকে জুটো চাটতে বাধ্য করা হয়। তেজবালি সিং নামের ওই ব্যক্তিকে কান ধরে উঠবোসও করানো হয়। কিছুদিন আগেই মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে দলিত সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের নিগ্রহ খবর সামনে আসে। একজনের গায়ে প্রসাব করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে।
নতুন বছরেই দেশজুড়ে লোকসভা ভোটের বাদ্যি বাজবে। ‘তুই’ না ‘মুই’ দ্বন্দ্বে মেতে উঠবে দেশের রাজনৈতিক মহল। দলিতদের নিয়ে হবে নয়া রাজনীতি। তাদের কানে একদিকে ‘বিকাশ’-এর মন্ত্র, অন্যদিকে মেরুকরণের বিদ্বেষ ঢোকানো হবে সযত্নে। এই বিদ্বেষের রাজনীতিতে গেরুয়া শিবিরকে টেক্কা দেওয়া সত্যি মুশকিল।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দলিত-তফশিলি জাতিদের ভোট ‘সোনার দামে’ বিকলেও ভোট পরে তাদের অবস্থা হয় বর্তমানে ‘ছোট এক টাকা কয়েনের’ মতো। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশকে দুষ্কৃতী, মাফিয়া মুক্ত রাজ্য হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন যোগীরাজ্য এখন ‘ভয়মুক্ত’-এর প্রতীক। কথাটা পরোক্ষভাবে ঠিক বটে। যোগী রাজ্য গুন্ডা-মস্তানদের জন্য ভয়মুক্ত হলেও, পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য তা নিগ্রহ মুক্ত করতে পারেন নি তিনি।