পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: গণকবরকে ঘিরে নতুন করে উত্তপ্ত মণিপুর। কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে বিগত প্রায় তিনমাস ধরে চলা জাতিবিদ্বেষকে কেন্দ্র করে অচলাবস্থায় এই পাহাড়ি রাজ্য। এই দাঙ্গায় প্রায় দেড়শোর বেশি মানুষ নিহত। আহত বহু। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক বাড়ি। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। এদিকে পরিস্থিতির মধ্যে আইআরবি ক্যাম্প থেকে একে অ্যাসল্ট রাইফেল সহ ১৯ হাজার বুলেট, ১২৪টি গ্রেনেড লুট হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বিষ্ণুপুর জেলার নারানসিনায় অবস্থিত দ্বিতীয় ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের ব্যাটালিয়ন সদর দফতরে। এক উর্ধতন আধিকারিক জানিয়েছেন, অস্ত্র লুটপাটের একটি নতুন ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ক্যাম্পের অস্ত্রাগারের মধ্যে ঢুকে অস্ত্র লুট করেছে একদল মানুষ। ‘ঘাতক’ সিরিজের একে অ্যাসল্ট রাইফেল, ১৯০০০ হাজার বুলেট ও বিভিন্ন ধরনের গ্রেনেড লুট করে নিয়ে গেছে তারা। ১৯৫টি সংক্রিয় রাইফেলস, পাঁচটি এমপি বন্দুক, ১৬৯ এমএম পিস্তল, ২৫টি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, ২১ কার্বাইন, ১২৪ হ্যান্ড গ্রেনেড। বিষ্ণুপুর জেলার নারানসিনায় অবস্থিত দ্বিতীয় ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের ব্যাটালিয়ন সদর দফতরে এই লুট চালায় তারা।’ উল্লেখ্য, গণকবর দেওয়াকে ঘিরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মণিপুর।
টানা ৯০ দিন চলা সহিংসতার মধ্যেই দক্ষিণ মণিপুরের সহিংসতায় বিধ্বস্ত দুই জেলা চূড়াচাঁদপুর ও বিষ্ণুপুরের মধ্যবর্তী পার্বত্য গ্রাম হাওলাই খোপিতে তাঁদের সমাজের ৩৫ জনকে গণকবর দিতে চেয়েছিলেন কুকি জনগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন উপজাতীয় সমাজের প্রতিনিধিরা। তীব্র প্রতিবাদ জানায় মেইতেই সমাজের মানুষ। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ওই অঞ্চলকে একটি সমাধিস্থল বা কবরস্থানে পরিণত করা যাবে না। প্রায় ২৫ জনের বেশি আহত হয়। সেনা ও র্যাফ নামানো হয়। কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হয়। বিষ্ণুপুরের কাংগভি ও ফুচাকগাও অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এগিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ সেই মিছিল আটকায়। তখনই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনায় হস্তক্ষেপ করে আদালত। মণিপুরের হাইকোর্ট চূড়াচাঁদপুর জেলার প্রস্তাবিত সমাধিস্থলে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি এম ভি মুরলিধরন এবং এ গুণেশ্বরের দুই সদস্যের বেঞ্চ পরিকল্পিত গণকবর স্থগিত করে এলাকায় স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। শান্তি বজায় রাখতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে বলা হয়। ফলে সংঘর্ষের কয়েক ঘণ্টা আগেই জাতিগত ও সম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত কুকি-জোমি সমাজের নিহত সদস্যদের গণকবর স্থগিত করে দেওয়া হয়।