পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: : সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বিধ্বস্ত হরিয়ানার গুরুগ্রামের নুহ জেলা। ইতিমধ্যেই এই সংঘর্ষ প্রাণ কেড়েছে ৬ জনের, আহত ৭০-এর বেশি। লাঠি, লোহার রড, বন্দুক সঙ্গে নিয়ে কিভাবে একটি ধর্মীয় মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার দিন পরিস্থিতির বীভৎসতায় কেঁপে উঠেছেন স্বয়ং এক মহিলা বিচারক। উন্মত্ত জনতা তাদের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়, পাথর ছুঁড়তে থাকে। আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কোনওরকমে নিজের তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে প্রাণ বাঁচান ওই মহিলা বিচারক।
নুহের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় প্রধান অঞ্জলি জৈন এফআইআর-এ জানিয়েছেন, ঘটনার দিন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যান তিনি। তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে তিনি গাড়িতে ছিলেন। তখনই উন্মত্ত জনতা তাঁর গাড়িতে আক্রমণ চালায়। কোনও রকমে শিশুসন্তানকে সঙ্গে গাড়ি থেকে নেমে দৌড়তে থাকেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন গাড়ির চালক ও তাঁর নিরাপত্তায় বন্দুকধারী সিয়ারাম। তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে থাকে হামলাকারীরা। এই হিংস্রতার হাত থেকে কোনওরকমে প্রাণ বাঁচাই। ছুটে গিয়ে পুরনো একটি বাসস্ট্যান্ডের ওয়ার্কশপে শিশুসন্তানকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আশ্রয় নিই। পরে এক আইনজীবী এসে আমাদের উদ্ধার করেন।
আদালতের প্রসেসর সার্ভার হিসেবে কর্মরত টেক চাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতে একটি এফআইআর দায়ের হয়েছে। এফআইআরে জানানো হয়েছে, সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ ভক্সওয়াগেন গাড়িতে করে অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় প্রধান অঞ্জলি জৈন তাঁর ৩ বছরের কন্যা সন্তানকে নিয়ে নালহারে এসকেএম মেডিক্যাল কলেছে আসেন কিছু ওষুধ কেনার জন্য। তাদের সঙ্গে ছিলেন চালক ও বন্দুকধারী সিয়ারাম। দুপুর ২টো নাগাদ বাড়ির ফেরার পথে দিল্লি-আলওয়ার রোডে পুরনো বাস স্ট্যান্ডের কাছে দাঙ্গা শুরু হয়।
প্রায় ১০০-১৫০ হামলাকারীরা তাদের গাড়ির উপর আক্রমণ চালায়। পাথর ছুঁড়তে থাকে। ভেঙে যায় গাড়ির কাচ। গুলি চালাতে শুরু করে। কোনওরকমে প্রাণ বাঁচাই। পরের দিন পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখি আমার গাড়িতেও আগুন ধরানো হয়েছিল। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৮ (দাঙ্গা), ১৪৯ (বেআইনি সমাবেশ), ৪৩৫ (ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে আগুন), ৩০৭ (খুনের চেষ্টা) এবং অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।