পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: রামের রামে লিঞ্চিংয়ের ঘটনা প্রায় এক দশক ধরেই ঘটছে। তবে মোদি-যোগীর নাম নিয়ে খুনের খবর আগে সেভাবে মেলেনি। সেই হিসাবে সফল বিদ্বেষীরা। সোমবার ছুটন্ত ট্রেনে মোদি-যোগীর নাম করে খুন করল রেলওয়ে পুলিশ ফোর্সের কনস্টেবল চেতন সিং। বেছে বেছে তিন মুসলিমকে পৃথক পৃথক বগিতে গিয়ে খুঁজে খুঁজে খুন করেছে চেতন। এই খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার আদালত আরপিএফ কনস্টেবল চেতন সিংকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত রেল পুলিশের হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
তিন মুসলিম রেলযাত্রীকে খুন ছাড়াও পশ্চিম রেলওয়ে এএসআই টিকারাম মীনাকেও খুন করে চেতন। ঘটনার পর নিহত এএসআই-এর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হলেও নিহত মুসলিম যাত্রীদের পরিবারের জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়নি।
সংবাদ সংস্থা এএনআই ট্যুইটে জানিয়েছে পশ্চিম রেলওয়ে এএসআই টিকারাম মীনার পরিবারের সদস্যদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে। রেলওয়ে নিরাপত্তা কল্যাণ তহবিল থেকে পরিবারের হাতে ১৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এর সাথে, টিকারাম মীনার শেষকৃত্যের জন্য ২০,০০০ টাকা খরচও রেল বহন করবে। তাছাড়াও সাধারণ বীমা প্রকল্পের অধীনে তার পরিবারের সদস্যদের ৬৫,০০০ টাকা দেওয়া হবে।
নিহত মুসলিম যাত্রীদের পরিবারের হাতে ক্ষতিপুরণ কেন দেওয়া হবে না, তা নিয়ে রেলের তরফে আলাদা করে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। নিহত আসগর শেখের পরিবারের দাবি, কেন্দ্র সরকার বা রেল কেউ তো অন্তত নিহত আসগরের পরিবারের পাশে দাঁড়াক। সরকার বা রেলওয়ের উচিত নিহতের স্ত্রীকে সরকারি চাকরি দেওয়া । যাতে তিনি সংসার ও সন্তানের ভরণ-পোষণ করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা।
নিহত আসগর শেখের আত্মীয় আসিফ জানান, সকালেই যে আরপিএফ অফিসার মারা গেছেন তার জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু আসগর শেখের জন্য কোনো ক্ষতিপূরণের কথা বলা হয়নি। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা ধর্নায় বসব, লাশ নেবো না।
অভিযুক্ত মোট ১২ রাউন্ড গুলি চালায়। ঘটনার পর অভিযুক্তের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ‘আগর ভোট দেনা হ্যায়, হিন্দুস্তান মে রেহেনা হ্যায়, তো মোদি অর যোগী…… এহি দো হ্যায়’ বলেই পরপর গুলি চালাল চেতন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন পূর্ব রেলের আইজি (আরপিএফ) পরম শিবের। তিনি প্রশ্ন তোলেন ‘বেছে বেছে মুসলিমদেরই খুন কেন? গুলি চালানোর আগে অভিযুক্ত কনস্টেবল কেন ‘জয় যোগী, জয় মোদি’র স্লোগান তুলেছিল?’