পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:: হরিয়ানায় একটি ধর্মীয় মিছিলকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক সংহিসতার ঘটনায় নিহত কমপক্ষে ৫ জন। সোমবার গুরুগ্রামের একটি মসজিদে হামলা চালানো হয়। মৃত্যু হয়েছে ওই মসজিদের ইমামের। নিহত হয়েছেন তিনজন হোম গার্ড। গুরুগ্রামে ২৬ বছর বয়সের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা প্রায় ১৫। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছেন। নিহত পুলিশদের নাম নীরজ ও গুরসেবক, যারা খেদালি দৌলা থানায় মোতায়েন ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, হরিয়ানার নুহতে দুই সম্প্রদায়ের সংঘর্ষে আহত পুলিশ সদস্যদের গুরগাঁওয়ের মেদান্ত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছেঅ গুরুগ্রাম থেকে মেওয়াতের দিকে মিছিল করার সময় জনতা পুলিশ দলগুলির উপর হামলা চালায়। হামলায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
গতকাল সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় পাথর ছোঁড়া থেকে শুরু করে সরকারি, বেসরকারি গাড়ি পোড়ানো হয়। বেশ কয়েকটি দোকান জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। প্রাণের ভয়ে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ একটি মন্দিরে আশ্রয় নেয়। আজ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। নুহের সোহনা ও ফরিদাবাদ জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। কারফিউ জারি করা হয়েছে। আগামী বুধবার ২ আগস্ট পর্যন্ত এই কারফিউ জারি থাকবে। ২০ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় হরিয়ানার গুরুগ্রামের স্কুল, কলেজ সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ কোচিং সেন্টারগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর হিন্দিতে একটি ট্যুইট করে জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনা দুঃখজনক। আমি রাজ্যের সকলের কাছে শান্তি রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। দোষীদের কোনো মূল্যে ছাড় দেওয়া হবে না, এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
आज की घटना दुर्भाग्यपूर्ण है, मैं सभी लोगों से प्रदेश में शांति बनाए रखने की अपील करता हूँ।
दोषी लोगों को किसी भी कीमत पर बख्शा नहीं जाएगा, उनके खिलाफ सख्त से सख्त कार्रवाई की जाएगी।
— Manohar Lal (@mlkhattar) July 31, 2023
এই ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে আখ্যা দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ। মন্ত্রী এদিন বলেন, ‘কেউ হরিয়ানার শান্তি ভঙ্গ করতে চেয়েছিল। কারফিউ জারি করা হয়েছে। সোমবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিল থামানোর চেষ্টাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পর নুহতে চারজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। নূহ জেলায় কারফিউ জারি আছে।’
মঙ্গলবার পুলিশ এক বিবৃতি দিয়ে জানায়, গুরুগ্রামের সেক্টর ৫৭ এলাকায় একটি মসজিদে হামলা হয়েছে, একজনের মৃত্যু হয়েছে। মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যার দিকে বজরং দলের এক কর্মীর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় হরিয়ানার গুরুগ্রামে। এক ধর্মীয় মিছিল চলাকালীন রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গুরুগ্রামের নুহ এলাকা। পাথর ছোঁড়া থেকে গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। সরকারি ও বেসরকারি গাড়ি পুড়িয়ে, পাথর ছুড়ে আক্রোশ মেটায় উত্তেজিত জনতা । হামলা চালানো হয় গুরুগ্রামে একটি মসজিদে।
হরিয়ানার মেওয়াতে নূহ এলাকার নিহত দুই ব্যবসায়ী নাসির ও জুনায়েদের হত্যার মূল অভিযুক্ত মনু মানসের বিশ্ব পরিষদের শোভাযাত্রায় সামিল থাকবে, এই নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। নুহ থেকে ফিরোজপুর ঝিরকা পর্যন্ত শোভাবাজার আয়োজন করেছিল বজরং দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। একটি সাধারণ ধর্মীয় শোভাযাত্রা হলেও ‘গোরক্ষা সর্দার’ হিসেবে পরিচিত ও অভিযুক্ত মনু মানেসরের আগমন ও বার্তা নিয়ে বিতর্ক বাধে। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। মিছিল নালজার মহাদেব মন্দিরের পৌঁছলে পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানায়। প্রায় ১০০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।