পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: লোকসভা ভোটে বিজেপি সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে উত্তরপ্রদেশকে। কথাতেই আছে ‘ইউপি যার দিল্লি তার’। ফের দিল্লি দখলের বিজেপির এই খায়েশ বাস্তবায়নের জন্য যোগী আদিত্যনাথ যে হিন্দুত্বের স্ক্রিপ হাতে ময়দানে নামবেন তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই। সোমবার সেটাই শুরু করে দিলেন যোগী।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যোগী বলেন, প্রায় সাড়ে চারশো বছরের পুরনো বারণসীর ওই মসজিদ আদতে হিন্দু মন্দির! তিনি আরও দাবি করেন, ‘ওটিকে (জ্ঞানভাপী) মসজিদ বলা হলে সংঘাত বাধবেই।’ জ্ঞানভাপী মসজিদের সমীক্ষা সংক্রান্ত একটি মামলা ইলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারাধীন। তারই মধ্যে বিতর্কের আগুনে ঘি ঢাললেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এটা যে তিনি ছক কষেই করেছেন, তা বুঝতে রাজনৈতিক মহলের অসুবিধা হয়নি।
জ্ঞানভাপীর কার্বন ডেটিং নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে যোগী বলেন, এটাকে মসজিদ বললে ভুল হবে। যদি এটি মসজিদই হয়, তবে তার মধ্যে ত্রিশূল এবং শিবলিঙ্গ কী করে এল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। যোগী বলেন, জ্ঞানবাপীর দেওয়ালে রয়েছে হিন্দু দেবদেবীর ছবি। মসজিদের দাবি থেকে মুসলিম সম্প্রদায়কে পিছিয়ে আসার পরামর্শ দেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, মুসলিম সমাজের তরফেই প্রস্তাব আসা উচিত। বলা উচিত, যে ঐতিহাসিক ভুল হয়েছে, তার সমাধান হোক।’’
কয়েকদিন আগে জ্ঞানভাপী মসজিদের কার্বন ডেটিং সংক্রান্ত মামলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন সমাজবাদী পার্টির সাধারণ সম্পাদক স্বামী প্রসাদ মৌর্য। তিনি স্পষ্ট বলেছিলেন জ্ঞানভাপী মসজিদে সমীক্ষা হলে, হিন্দু মন্দিরেও সমীক্ষা হওয়া উচিত। স্বামী প্রসাদ বলেন, দেশে বহু হিন্দু মন্দির আছে, যেগুলি বৌদ্ধ মঠকে ধ্বংস করে গড়ে উঠেছিল।
হিন্দু পক্ষের আবেদন অগ্রাহ্য করে জ্ঞানভাপী মসজিদে নামাযের অধিকার বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। ‘আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি’-র আবেদন মেনে শীর্ষ আদালত এবং ইলাহাবাদ হাই কোর্ট জ্ঞানভাপী মসজিদে এএসআই-এর সমীক্ষার উপর স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছে। অথচ তাকে তোয়াক্কা না করে জ্ঞানভাপীকে মন্দির বলে দাবি করেন যোগী। তাঁর মন্তব্যে নতুন করে উত্তেজনা এবং মেরুকরণ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখছেন রাজনৈতির বিশ্লেষক এবং বিরোধীদের একাংশ। এই ধরনের মন্তব্য মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করবে বলে মনে করছে তারা। কার্বন ডেটিং নিয়ে রায়ের আগে হাইকোর্টের উপর যোগীর চাপ সৃষ্টির কৌশল বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
সপা নেতা আরও বলেন যে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কোনও ইস্যু নেই। মোদি সরকারের উপর দেশের মানুষের তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। তার মতে, ভোটে লড়তে এবার হিন্দুত্বকে হাতিয়ার করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। তবে, দেশের মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে বিজেপির রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সফল হবে না বলেও দাবি করেন মৌর্য।