পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: আবার ক্যাম্পাসে ফিরল আমিষ-নিরামিশ দ্বন্দ্ব। এবার বম্বে আইআইটি হস্টেল ক্যান্টিনে পড়ুয়াদের আমিষ খাওয়ার উপর কার্যত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শুধুমাত্র নিরামিষ খাওয়ায় ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষ রীতিমতো নোটিশ দিয়ে ঘোষণা দিয়েছে, শুধুমাত্র নিরামিষ খেতে ইচ্ছুক পড়ুয়াদেরই এখানে খেতে দেওয়া হবে। ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষের এই নির্দেশ ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ঘটনার সূত্রপাত আমিষ-নিরামিশ খাওয়া নিয়ে একটি গন্ডগোলকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ, গত সপ্তাহে হস্টেলে আমিষ খাচ্ছিল এক ছাত্র। তাতে আপত্তি জানায় গেরুয়া শিবির ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ছাত্র। তারা ওই ছাত্রকে রীতিমতো হেনস্থা ও মারধর করে। তারপর থেকেই ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষ এই নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পড়ুয়ার থেকে এমনটা জানা গিয়েছে। যদিও ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা এই ধরনের কোনও নোটিশ দেয়নি। ছাত্রদের একটি অংশ (যারা আমিশে আপত্তি জানিয়েছিল) এই নোটিশ লাগিয়েছে। তাদের বক্তব্য, কিছু ছাত্র ক্যান্টিনের দেয়ালে ‘শুধুমাত্র নিরামিষাশীদের এখানে বসতে দেওয়া হয়, আর যারা আমিষ খাবার পছন্দ করে তাদের জায়গাটি খালি করে দিতে হবে’-এই মর্মে ঘোষণা দিয়ে পোস্টারটি লাগানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, তিন মাস আগে ছাত্রদের তরফে ‘তথ্য জানার অধিকার আইন’-এ করা একটি প্রশ্নের জবাবে জানা যায় যে, ইনস্টিটিউটে ‘সরকারিভাবে’ কোনও খাদ্য বিভাজন নীতি নেই। তবে, ছাত্রদের খাবারের পছন্দের উপর ভিত্তি করে বসার আলাদা আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। সেই নিয়ম এখনও চালু রয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক পড়ুয়াই প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী ট্যুইটারে অভিযোগ করেছে যে, এই ধরনের আচরণ অপমানজনক। ‘আম্বেদকর পেরিয়ার ফুলে স্টাডি সার্কেল’ (এপিপিএসসি)-এর এক ছাত্র ট্যুইটে লিখেছে, ‘যদি হোস্টেল কর্তৃপক্ষের আরটিআই এবং মেলগুলি খতিয়ে দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে খাদ্য-ভেদাভেদের জন্য আইআইটি বম্বের কোনও প্রতিষ্ঠানগত নিয়ম-নীতি নেই। কিছু ছাত্র ও লোক এই নিয়ম চাপিয়ে দিয়েছে। এমনটা চলতে থাকলে শুধু বর্ণবাদ প্রাধান্য পাবে। এটা চলতে দেওয়া যায় না। প্রত্যেকের নিজ পছন্দের খাবার খাওয়ার অধিকার রয়েছে। সেই নিয়ম বহাল রাখতে হবে। ক্যাম্পাসে এই ধরনের ‘নিয়ম’ করে আসলে বৈষম্য তৈরি করা হচ্ছে।