পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের চিত্র ইদানীং ব্যাপকভাবে সামনে আসছে। মুসলিমরা এর শিকার পরিণত হয়েছে বার বার। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সংখ্যালঘু খ্রিস্টানরা। মণিপুরে কুকিদের উপর যে জাতিগত সহিংসতা চলছে, তাদের বেশিরভাগই খ্রিস্টান। সেখানে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের মধ্যে একটি হল, তারা হিন্দুদের খ্রিস্ট ধর্মে ধর্মান্তরণ করার চেষ্টা করছে। মণিপুরকে নাকি তারা খ্রিস্টানশাসিত রাজ্যে পরিণত করবে। বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশেও এমনই অভিযোগ উঠেছে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে। সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে ধর্মান্তরণের মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছে সেখানকার বিজেপি সরকার। এই অভিযোগ তুলে একটি খ্রিস্টান অনাথ আশ্রম বন্ধ করে দিয়েছে বিজেপি। অরফ্যানেজের শিশুদের সরকার-পরিচালিত একটি আশ্রমে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
আশ্রমটিতে ৭৩টি শিশু ছিল, যার মধ্যে ৩৮টি ছেলে ও ৩৫টি মেয়ে। তবে যাদের মা বা বাবার মধ্যে কেউ বেঁচে আছে, তাদেরকে বাড়িতেই পাঠানো হয়েছে। মাত্র ৩০ জন শিশুকে সরকারি অরফ্যানেজে পাঠানো হয়েছে। এটির পরিচালনার দায়িত্বে ছিল আলিরাজপুরের খ্রিস্টান ট্রাইবাল গ্রুপ আদিবাসী সহায়তা সমিতি। মধ্যপ্রদেশ বিজেপি সরকারের শিশু অধিকার আধিকারিকদের অভিযোগ, জুভেনাইল জাস্টিস (কেয়ার অ্যান্ড প্রোটেকশন) অ্যাক্ট অনুযায়ী এদের রেজিস্ট্রেশনও নেই। আর সবচেয়ে বড় অভিযোগ, অরফ্যানেজের ম্যানেজাররা এইসব কোমলমতি শিশুদের ধর্মান্তরণ করার চেষ্টা করছেন। অরফ্যানেজ থেকে বাইবেলের কপিও উদ্ধার হয়েছে। তবে সেগুলি পাওয়া গেছে খ্রিস্টান শিশুদের কাছ থেকেই। খ্রিস্টান শিশুদের কাছে তাদের ধর্মগ্রন্থ থাকতেই পারে, তাতে অপরাধের কী আছে? এ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই ট্রাইবাল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট কল্পনা ড্যানিয়েল জানান, আমি লাইসেন্সের জন্য সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু অফিসাররা তা দিতে রাজি নয়। তিনি আরও জানান, আমাদের কাউন্সিল রেজিস্টার্ড। গত ৩০ বছর ধরে আমরা গরিব মানুষদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আলাদা করে অরফ্যানেজের লাইলেন্স লাগবে তা এতদিন কেউই আমাদের বলেনি। কোনও নোটিশ আসেনি জেলা শিশু কল্যাণ কমিটি থেকেও। খ্রিস্টান নেতারা মনে করছেন, ভোটারদের মেরুকরণ করার জন্যই বিজেপি সরকার এ ধরনের আচরণ করছে।