পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: প্রেমের টানে পাকিস্তানে পাড়ি দিলেন রাজস্থানের গৃহবধূ অঞ্জু। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক যতই তলানিতে ঠেকুক না কেন, প্রেমে কোনও বাধা নেই। সীমা হায়দর-শচীনের পর আর এক প্রেম কাহিনি এখন সংবাদের শিরোনামে। এবার উলোটপুরাণ। পাকিস্তানি সীমা হায়দর তাঁর চার সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে অবৈধভাবে ‘সীমা’ পেরিয়ে প্রেমিক শচীনের ‘হৃদমন্দিরে’ পৌঁছেছিলেন। কিন্তু ভারতীয় গৃহবধূ অঞ্জু তাঁর পাকিস্তানি প্রেমিক নাসরুল্লাহর সঙ্গে দেখা করতে বৈধ কাগজপত্র-সহ পৌঁছে গিয়েছেন পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায়। অঞ্জুর একটাই কথা, নাসরুল্লাহকে ছাড়া তিনি থাকতে পারবেন না।
অঞ্জুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেসবুকের মাধ্যমে ৩৬ বছরের গৃহবধূ অঞ্জুর সঙ্গে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলের বাসিন্দা নাসরুল্লাহর সঙ্গে পরিচয় হয়। এও জানা গিয়েছে, অঞ্জুর পাক প্রেমিক নাসরুল্লা তাঁর থেকে পাঁচ বছরের ছোট। খাইবার পাখতুনখোওয়া প্রদেশের দিরের বাসিন্দা নাসরুল্লাহ আগে শিক্ষকতা করলেও এখন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে কর্মরত। অঞ্জুও রাজস্থানের একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী।
ফেসবুকে পরিচয় থেকে ধীরে ধীরে দু’টি মন কবে যে এক হয়ে যায়, তা টেরই পাননি অঞ্জু-নাসরুল্লা! প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে তিনি উদগ্রীব হয়ে উঠেছিলেন। স্বামী-সন্তানদের কথা চিন্তা করে খানিক অস্বস্তিতে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত মনের সব দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে প্রেমের টানে দুই সন্তান ও স্বামীকে রেখে প্রেমিকের টানে পাকিস্তান পাড়ি দিলেন অঞ্জু।
রাজস্থানের ভিওয়াড়িতে ভাড়াবাড়িতে স্বামী অরবিন্দ ও দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন অঞ্জু। তাঁর বিদেশে যাওয়ার খুব ঝোঁক ছিল বলে জানিয়েছেন অরবিন্দ। তাই পাসপোর্টও তৈরি করেন ২০২০ সালে। কয়েকদিন আগে অঞ্জু তাঁর স্বামীকে জানান জয়পুরে তাঁর বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। সেইমতো অঞ্জু বাড়ি থেকে রওনা হন। এরপরেই পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন অঞ্জু। এই খবর চাউর হতেই লাহোর থেকে ফোনে অঞ্জু তাঁর স্বামীকে জানান তিনি লাহোরে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। ২-৩ দিনের মধ্যেই ফিরে আসবেন। জয়পুরে যাওয়ার নাম করে স্ত্রীর পাকিস্তানে যাওয়ার ঘটনায় হতবাক স্বামী অরবিন্দ।
জানা গিয়েছে, অঞ্জু যে একমাসের ভিজিট ভিসা নিয়ে পাকিস্তানে গিয়েছে, তাতে বিয়ের জন্য পাকিস্তানে আসার কথাও উল্লেখ রয়েছে। তবে লাহোরে নামার পরই তাঁকে গ্রেফতার করে পাক পুলিশ। বেআইনি অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু অঞ্জুর কাছে বৈধ কাগজপত্র থাকায় তাঁকে রেহাই দিয়েছে পাক পুলিশ। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করার জন্য অঞ্জুকে নিরাপত্তাও দেওয়া হয়। অঞ্জুর পাসপোর্টে এন্ট্রি থেকে জানা গিয়েছে, তিনি ২১ জুলাই পাকিস্তানে প্রবেশ করেছেন। অঞ্জুর ভিজিট ভিসার মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি।
পাকিস্তানি নিরাপত্তা সংস্থাগুলি অঞ্জুর ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে। জানা গিয়েছে, পাক পুলিশ আধিকারিকরা অঞ্জুকেও জিজ্ঞাসা করেছে কেন তিনি এখানে এসেছেন? জবাবে অঞ্জু বলেছেন, তিনি এখানে নাসরুল্লাহর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন, কারণ তিনি নাসরুল্লাহকে ছাড়া থাকতে পারবেন না। সীমা চার সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে প্রেমিক সচিনের কাছে এসেছেন আর অঞ্জু দুই সন্তানকে ছেড়ে চলে গেলেন প্রেমিক নাসিরুল্লাহর কাছে।