পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ঐতিহাসিক দিন, ন্যাটোতে যোগদানের জন্য সুইডেনের প্রস্তাবকে সমর্থন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ঐতিহাসিক দিন। তুরস্কের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রায় একবছর ধরে অবরোধ চালানোর পর ন্যাটোতে যোগদানের জন্য সুইডেনের প্রস্তাবকে সমর্থন করলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। সোমবার ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে ঘোষণা করেন। ন্যাটো মহাসচিব জানান, তাইয়্যেপ এরদোগান সুইডেনের সদস্যপদ তুরস্কের সংসদে এগিয়ে দিতে সম্মত হয়েছেন। এরদোগান এবং সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসনের সঙ্গে লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়াসে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেন এরদোগান।
ন্যাটো মহাসচিব বিবৃতি দিতে গিয়ে বলেন, ‘আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। আমি ঘোষণা করতে পেরে আমি আনন্দিত যে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান ন্যাটোতে যোগদানের জন্য সুইডেনের প্রস্তাবকে সমর্থন করতে রাজি হয়েছেন।’ তবে ন্যাটো প্রধান স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, সুইডেন কখন সামরিক জোটে যোগ দেবে, সেটির ‘স্পষ্ট তারিখ’ দেওয়া যাবে না। কারণ, এটি তুরস্কের পার্লামেন্টের ওপর নির্ভর করছে।
ন্যাটো সদস্যপদ পেতে সামরিক জোটের সকল সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন। তুরস্ক এর আগে কুর্দি জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের আবেদনটি কয়েক মাস ধরে আটকে রেখেছিল। ৩১ দেশের জোট ন্যাটোর সদস্য হিসেবে তুরস্কের এতে যোগদান করতে চাওয়া যেকোনও নতুন দেশের ওপর ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমি ইউরো-আটলান্টিক এলাকায় প্রতিরক্ষা ও প্রতিরোধ বাড়াতে প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও তুরস্কের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। আমি আমাদের ৩২তম ন্যাটো মিত্র হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টারসন ও সুইডেনকে স্বাগত জানাতে উন্মুখ।’
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেন বেয়ারবক ট্যুইট করে জানিয়েছেন, ‘৩২ বছর বয়সে আমরা সবাই একসঙ্গে নিরাপদ।’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন ‘সুইডেনের যোগদান আমাদের সবাইকে নিরাপদ করে তুলবে’।
উল্লেখ্য, তুরস্ক প্রথম ১৯৮৭ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট এরদোগানের অনড় আচরণ এতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে এরদোগান মস্কোতে প্রভাবশালী ন্যাটো নেতা হিসেবে অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি গত বছর কৃষ্ণসাগরের শস্য চুক্তি পাসে মধ্যস্ততাকারী ছিলেন। এর ফলে ইউক্রেন কৃষিপণ্য রফতানি করতে সক্ষম হয়েছিল।
সুইডেন এবং এর প্রতিবেশী ফিনল্যান্ড যুদ্ধকালীন নিরপেক্ষতার দীর্ঘ ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও গত বছরের মে মাসে ন্যাটোতে যোগদানের অভিপ্রায় জানিয়েছিল। রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার কয়েক মাস পর উভয় দেশ এমন প্রস্তাব করে। গত এপ্রিল মাসে ফিনল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোতে যোগ দেয়।