পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ভারতীয় কাশির সিরাপ খেয়ে উজবেকিস্তানের ১৯ শিশুর মৃত্যুর খবরে শিউরে উঠেছিল ভারতীয় অভিভাবকরাও। সকলের মনেই প্রশ্ন ছিল- তাদের সন্তানরাও এমন কোনও কাশির সিরাপ খাচ্ছে না তো! তোলপাড় হয়েছিল ‘হু’ থেকে ভারতের চিকিৎসক মহল।
এই ঘটনায় দায়ী ভারতীয় ওষুধ কোম্পানি, ম্যারিয়ন বায়োটেকের বিরুদ্ধে এখনও তদন্ত চলছে। কয়েকমাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও শেষ হয়নি তদন্ত। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন তদন্তকারী এই কোম্পানী সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন।
জানা গেছে, ম্যারিয়ন বায়োটেক কাশির সিরাপ তৈরির জন্য ব্যবহৃত প্রোপিলিন গ্লাইকল কিনে এনেছিল, মায়া কেমটেক ইন্ডিয়া নামের একটি কোম্পানির কাছ থেকে। ওষুধে ব্যবহৃত কেমিক্যাল তৈরির লাইসেন্স আদৌ ওই কোম্পানির নেই। তারা শিল্পে ব্যবহৃত রাসায়নিক তৈরি করে। ওই কোম্পানির কর্মচারীদের মতে, সেখানে উৎপাদিত প্রোপিলিন গ্লাইকল ডিটারজেন্ট, অ্যান্টি-ফ্রিজ, রং, কোটিং এমনকি কীটনাশকে ব্যবহার করা হত।
প্রশ্ন, তাহলে মায়া কেমটেক ইন্ডিয়া কেন শিল্পে ব্যবহৃত কেমিক্যাল ওষুধ কোম্পানির কাছে বিক্রি করেছিল? এই প্রশ্নের উত্তরে ওই কোম্পানির আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ওই রাসায়নিক কোন কাজে ব্যবহার করা হবে তা তাদেরকে জানানো হয়নি। সেই কারণেই তারা বিক্রি করেছিলেন।
দেশে দুধরণের প্রোপিলিন গ্লাইকল তৈরি করা হয়। একটি শিল্পোৎপাদনে কাজে লাগে, অন্যটি ওষুধ তৈরির কাজে। দেশে ওষুধ তৈরির যে নিয়ম রয়েছে, সেখানেও স্পষ্ট করা আছে, শিল্পোৎপাদনে ব্যবহৃত কোনও কেমিক্যাল ওষুধে ব্যবহার করা যাবে না। তারপরও শুধু মুনাফার কথা ভেবে নিয়ম ভাঙা হয়েছিল। এমনকি উজবেকিস্তানে ওষুধ পাঠানোর আগে সেগুলি পরীক্ষা করেও দেখেনি ম্যারিয়ন বায়োটেক।
উল্লেখ্য, বিশ্ব বাজারে ভারতে তৈরি ওষুধের ভালো বাজার রয়েছে। বিশেষ করে আফ্রিকার অনুন্নত দেশগুলিতে ভারতীয় ওষুধের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু উজবেকিস্তানে শিশুমৃত্যুর ঘটনার পর গোটা বিশ্বে ভারতীয় ওষুধের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
প্রশ্ন উঠছে দ্য সেন্ট্রাল ড্রাগস্ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের কাজকর্ম নিয়েও। দীর্ঘদিন ওষুধের মত জীবনদায়ী পণ্য নিয়ে যখন ছেলেখেলা করছিল ম্যারিয়ন বায়োটেক, তখন কেন চোখ বন্ধ করে ছিলেন তারা?