পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: চাকরি হয়নি। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বিদেশ ঘুরে বাড়ি ফেরেনি কালো টাকা। বিজেপির ৯ বছরের সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে পলিথিনের কাজ করেছে রাম মন্দির, তিন তালাক। ব্যর্থতা ঢাকার এই দুই পলিথিন আপাতত ব্যবহার করা হয়ে গেছে। এখন হাতে পড়ে আছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (ইউসিসি)। বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতিতে বিশেষ সাহায্য করছে ইউসিসি। সামনেই লোকসভা। অতএব এটা এখন চলবে।
বিদেশ সফর শেষ করে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিদেশে যাওয়ার আগে বা পরে মুখ খোলেননি মণিপুর নিয়ে। এখনও তাঁর অবস্থান একই। যদিও তড়িঘড়ি মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে নেমে পড়েছেন মোদি। তুলে আনছেন, অভিন্ন বিধির কথা। মুসলমান কন্যাদের নিয়ে তিনি যে চিন্তিত সেকথাও বলেছেন। এক দেশে সবার জন্য এক নিয়ম হওয়া উচিৎ বলেও প্রচার করছেন। প্রধানমন্ত্রীর এসব কথার উত্তরে মুখ খুলেছেন পোড় খাওয়া কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম।
বুধবার একটি ট্যুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রীকে তুলোধোনা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী গোটা দেশের মানুষকে একটি পরিবারের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কাব্যিক অর্থে প্রধানমন্ত্রীর কথা বেশ মানানসই । কিন্তু বাস্তবটা একেবারেই আলাদা। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে রক্তের সম্পর্ক থাকে। কিন্তু একটা দেশের মানুষকে একত্রিত করে সংবিধান। তাছাড়া একটা পরিবারের প্রতিটি মানুষ একরকম হয় না। তারা এক আইনে চালিত হয় না। তাদের মধ্যেও ভিন্নতা থাকে। মনে রাখতে হবে ভারতের সংবিধান ভারতের জনগনের মাঝে যে বৈচিত্র তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি একটা প্রত্যাশা, তাই বলে একটা এজেন্ডা চালিত সংখ্যাগরিষ্ঠদের সরকার, মানুষের উপর জোর করে সেটা চাপাতে পারে না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেখাতে চাইছেন এটা জল-ভাতের মত বিষয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উচিত বিগত আইন কমিশনের রিপোর্টটা একবার পড়ে দেখা। যেখানে স্পষ্ট লেখা হয়েছিল, এখনই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার প্রয়োজন নেই।
বিজেপির কথা আর কর্মের জন্যেই আজ দেশের মানুষের মধ্যে ফাটল তৈরি হয়েছে। আর ইউসিসি জোর করে চাপিয়ে দিলে এই বিভাজন আরও বাড়বে।
চিদম্বরম বলেন, প্রধানমন্ত্রী গলা ফাটিয়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির কথা প্রচার করছেন, কারণ তিনি মূল্যবৃদ্ধি, বেকরত্ব, বৈষম্য, হেট ক্রাইম থেকে মানুষের নজর ঘোরাতে চাইছেন। আসল সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতেই এমনটা করছেন তিনি। মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। বুঝে নিতে হবে।
কংগ্রেস নেতার মতে, দেশে সুসাশন সুনিশ্চিত না করতে পেরে ইউসিসি-র নামে মেরুকরণ শুরু করেছে বিজেপি। যাতে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে এই মেরুকরণের নৌকায় পা দিয়ে ভোট বৈতরণি পার করতে পারে তারা।