পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ক্লাস ফোরের পড়ুয়াকে বই দেখে একলাইন পড়তে বলা হয়েছিল। বাক্য তো দূর, একটা শব্দও উচ্চারণ করতে পারেনি পড়ুয়ারা। ভেঙে ভেঙে শুধু অক্ষরগুলি উচ্চারণ করতে পেরেছে। গুজরাতের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা, ছোটা উদয়পুর জেলার কয়েকটি প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের এই অবস্থা দেখে হতাশ সেখানকারই এক আইএএস আধিকারিক ধবল প্যটেল। প্যাটেল বলেন ৬টির মধ্যে ৫টি স্কুলের নিম্ন মানের শিক্ষাব্যবস্থা দেখে আমার লজ্জা লাগছিল। এই পরিস্থিতি দেখে, চুপ করে থাকতে পারেননি ওই আধিকারিক। সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষা বিভাগকে একটি চিঠি লেখেন প্যাটেল। তিনি বলেন, আদিবাসী শিশুদের এই মানের শিক্ষা দেওয়া হলে, তাদের পরবর্তী প্রজন্মও মজদুরি করতে বাধ্য হবে।
আইএএস আধিকারিকের অভিযোগের পর গুজরাতের শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে সেখানকার আধিকারিকদের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী, কুবের দিন্দর শিক্ষার পাশাপাশি আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের দায়িত্বেও রয়েছেন। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে দিন্দর বলেন, আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় কিছু সমস্যা রয়েছে। তিনি নিজেও ওই এলাকার বাসিন্দা। অভিভাবকদের মধ্যেও সচেতনতার অভাব রয়েছে। অভিভাবকদের সচেতন করার চেষ্টা চালানো হবে এবং যা যা অভাব অভিযোগ রয়েছে, তা মেটানোর চেষ্টা করা হবে।
প্রশ্ন উঠছে, শিক্ষামন্ত্রী নিজে যখন ওই এলাকার বাসিন্দা আর সেখানকার সমস্যা সম্পর্কে সচেতন, তখন এতদিন কেন তিনি কোনও পদক্ষেপ নেননি?
একদিকে গুজরাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রাথমিক স্কুলকে ‘প্রেরণা’-র মডেল হিসেবে তুলে ধরতে মরিয়া কেন্দ্রের সরকার। অন্যদিকে, ডবল ইঞ্জিন সরকার গড়লে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসবে রাজ্য, বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অথচ তাঁরা দুজনই যে রাজ্যের বাসিন্দা সেখানকার স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়ারা মাতৃভাষায় একটি শব্দও উচ্চারণ করতে পারছে না। না পারছে, যোগ-বিয়োগের মত সরল অঙ্ক। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি লাইনচ্যুত হচ্ছে ডবল ইঞ্জিন?