পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমেরিকা সফরের সময় জোরালো দাবি উঠেছিল ভারতে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আলোচনা করুক মোদির সঙ্গে। আর মিশর সফরকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মিশরের গ্রান্ড মুফতির আলোচনার মূল বিষয় ছিল সামাজিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি এবং ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও উগ্রপন্থা রোধ।
মিশরের গ্রান্ড মুফতি ডা. সাওমি ইবরাহীম আবদুল কারীম আল্লাম নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, নরেন্দ্র মোদি সাম্য ও বহুত্ববাদের লালনে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন।
সামাজিক ক্ষেত্রে সৌহার্দ্য বজায় ও ধর্মীয় সম্প্রীতি নিয়ে আমাদের আলোচনা হয় এবং উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসের মোকাবিলায় কাজ করার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীও জানান, গ্রান্ড মুফতির সঙ্গে আলোচনা করে আমি সম্মানিত বোধ করছি। আমরা মিশর ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি ও দুই দেশের মানুষের মধ্যে ব্যক্তিগত পর্যায়ে মেলবন্ধন নিয়ে আলোচনা করেছি।
অপরদিকে গ্রান্ড মুফতিও জানিয়েছেন, ভারতের মতো বিশাল দেশের প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। মোদির সঙ্গে বৈঠক করে গর্ব অনুভব করছি। ধর্মীয় ক্ষেত্রেও উভয়দেশ আরও নিবিড় সম্পর্কে আবদ্ধ হতে চলেছে।
উল্লেখ্য, মিশরের গ্রান্ড মুফতি কয়েকমাস আগে ভারত সফরে এসেছিলেন। সুফি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন দিল্লিতে। সেই সময় বলেছিলেন, ভারতে বহুত্বের মধ্যে একতা বজায় রাখতে নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী অবশ্য মিশরে গিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন মিশরের দারল ইফতা ফতওয়া বিভাগে ভারতের পক্ষ থেকে তথ্য ও প্রযুক্তির উৎকর্ষকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। মিশরের এই দারুল ইফতা পৃথিবীর মধ্যে ইসলামী আইন ও পরামর্শ বিষয়ক শ্রেষ্ঠ কেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত হয়। আর সেখানেই ভারতের আইটি সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে।
২০১৩ সালে ডা. আল্লাম মিশরের সর্বোচ্চ সম্মানীয় পদ গ্রান্ড মুফতির পদে আসীন হয়েছেন। বিশ্বব্যাপী ইসলামী আইন নিে পরামর্শ বা ফতওয়া বিষয়ক সংস্থার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এই সংস্থার অধীনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শতাধিক ফতওয়া কেন্দ্র রয়েছে। এই সংস্থা ইতিপূর্বে ভারতে পবিত্র কুরআন ও নবী সা. নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের নিন্দাও জানিয়েছিল। এই সংস্থা ইসলামী আইন বা শরীয়াহ আইন নিয়ে সুচিন্তিত অভিমত প্রকাশ করে থাকে। তাই ভারতে যে সময় শরীয়াহ আইন তুলে দিয়ে অভিন্ন দেওয়ানী বিধি চালু নিয়ে চেষ্টা চলছে সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এমন এক সংস্থার প্রধানের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক করলেন যে সংস্থা শরীয়াহ আইনের সংরক্ষণে বিশ্বে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে গণ্য। ভারতের উদ্দেশ্যে গ্রান্ড মুফতির সেই উক্তিটিও বিশ্বে সমাদৃত। ভারতে এসে তিনি বলেছিলেন, পারস্পরিক আস্থা ও সম্মানবৃদ্ধিতে শুভ ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবক্ষেত্রে তা প্রয়োগেরও প্রয়োজন রয়েছে