পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সশস্ত্র বিদ্রোহ বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা দল ওয়াগনার। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে বিশেষ চুক্তি হয়েছে ওয়াগনারের। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তিনি ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের সঙ্গে একটি ঐক্যমত্যে পৌঁছানোর বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তবে প্রিগোজিন শর্ত দিয়েছেন, ওয়াগনারের সদস্যদের নিরাপত্তা দিতে হবে। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইয়েভজেনি প্রিগোজিন রাশিয়ায় ওয়াগনারের সদস্যদের চলাফেরা বন্ধ করতে এবং উত্তেজনা কমাতে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রপতি লুকাশেঙ্কোর প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন।’ আরও বলা হয়, ‘লুকাশেঙ্কো এবং প্রিগোজিন সারাদিন আলোচনা করেছেন। এ সময়ে তারা রুশ ভূখণ্ডে সশস্ত্র বিদ্রোহ এবং রক্তপাত বন্ধে সম্ভাব্য শর্ত এবং করণীয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।’ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সমন্বয় করেই এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনায় প্রিগোজিনকে ওয়াগনারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ সংকট নিরসনে একটি সুবিধাজনক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো যখন ওয়াগনার যোদ্ধারা রাশিয়ার রোস্তভ-অন-ডন শহরে ঢুকে পড়ে তা নিয়ন্ত্রণের দাবি করেছিল এবং মস্কো অভিমুখে এগিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। তবে আলোচনার পর রক্তপাত এড়াতে মস্কো অভিমুখে যোদ্ধা দলের যাত্রা থামিয়ে দেন দলটির প্রধান প্রিগোজিন। বেলারুশের মধ্যস্থতায় চুক্তি সইয়ের পর স্বস্তির শ্বাস নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিনও। কারণ ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালে রাশিয়ার ভেতরে এ ধরনের অভ্যুত্থান পুতিনের জন্য বিরাট সমস্যা তৈরি করতে পারত। সমঝোতা অনুযায়ী রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে পাড়ি জমাচ্ছেন প্রিগোজিন। শনিবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র ওয়াগনারের সঙ্গে রাশিয়ার দ্বন্দ্ব নিরসনে শর্তগুলো তুলে ধরেন। লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় হওয়া চুক্তি অনুযায়ী ওয়াগনার যোদ্ধাদের বিচার করা হবে না বলে জানান পেসকোভ। তিনি বলেন, ওয়াগনার সেনারা ঘাঁটিতে ফিরে যাওয়ার জন্য রাজি হয়েছে। যারা বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করেনি তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হবে। এ ছাড়া সমঝোতা অনুসারে, ওয়াগনার প্রধানের বিরুদ্ধে সবধরনের ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা হবে। দিমিত্রি পেসকভ বলেন, রাশিয়া ছেড়ে মিত্র দেশ বেলারুশে যেতে পারবেন ওয়াগনার প্রধান এমনটাই কথা দিয়েছেন পুতিন। উল্লেখ্য, কয়েক মাস ধরেই রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দ্বন্দ্ব চলছিল ওয়াগনার প্রধানের। শুক্রবার ওয়াগনার যোদ্ধাদের ওপর মস্কো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এর কঠিন প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ওয়াগনার প্রধান। এক অডিয়োবার্তায় প্রিগোজিন বিদ্রোহের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই রোস্তভে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সামরিক সদর দফতরের নিয়ন্ত্রণ নেয় ওয়াগনার গ্রুপ। এই ঘটনাকে ‘পিঠে ছুরিকাঘাত’ উল্লেখ করে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।