বিশেষ প্রতিবেদন: দেশের ৫০ শতাংশ বৃদ্ধা নিরক্ষর, নির্যাতিত এমনই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট পেশ করল হেল্প এজ ইন্ডিয়া। গবেষণা বলছে সমীক্ষায় আসা মহিলাদের অর্ধেকেরও বেশি (৫৪ শতাংশ) বিবাহিত, বাকিরা বিধবা। রিপোর্ট অনুযায়ী এই সমস্ত মহিলা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে অর্ধেকেরও বেশি বয়স্ক মহিলা কখনই কর্মরত ছিলেন না। বেশিরভাগই পরিবার নিয়ে থাকেন।
সম্প্রতি দেশের ষাটোর্ধ বয়স্ক মহিলারা কেমন আছেন, সেই নিয়ে একটি দীর্ঘ গবেষণা চালায় হেল্প এজ ইন্ডিয়া। সেই রিপোর্টই পেশ করল সংশ্লিষ্ট সংস্থা। প্রতিবেদন বলছে, এই সমস্ত মহিলাদের মধ্যে ৫২ শতাংশ বৃদ্ধা জানিয়েছেন, তারা বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার। এর মধ্যে ১৬ শতাংশ জানিয়েছে, তাদের শারীরিক নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এছাড়াও নির্যাতনের মধ্যে রয়েছে অসম্মান, মানসিক অত্যাচার।
কেরল, কর্নাটক, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু এবং ওড়িশা সহ দিল্লি এবং চণ্ডীগড়ের দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, এবং চেন্নাই, হায়দরাবাদ এবং বেঙ্গালুরু সহ পাঁচটি মেট্রো শহর সহ ২০ টি রাজ্যের ৭৫০০ বয়স্ক মহিলাদের উপর গবেষনা চালিয়ে এই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে।
সমীক্ষা বলছে, বিধবা হওয়ার কারণে তারা অনেক ক্ষেত্রেই বৈষম্যের শিকার। এমনকি জীবনের কোনও বড় সিদ্ধান্তের জন্য পরিবারের অন্য কারুর ওপরে নির্ভর করতে হয়। তাদের মতামতের কোনও গুরুত্ব নেই।
গবেষণা অনুযায়ী জানানো হয়েছে, আগামী ২০১৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের বয়স্ক জনসংখ্যা (৬০ বছর বা তার বেশি) প্রায় ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে ১৪০ কোটিতে পৌঁছে যাবে বয়স্কদের সংখ্যা, যা বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ১৭ শতাংশ। ২৪ শতাংশ মহিলার বক্তব্য, তাদের সঙ্গ দেওয়ার জন্য সন্তানদের কাছে কোনও সময় নেই।
সমীক্ষায় গবেষণা অনুযায়ী এই ডিজিটাল যুগে ‘সময়’ এখন একটু দুর্লভ সামগ্রী। বাবা-মায়ের কাছে সন্তানদের জন্য সময় নেই, আবার বৃদ্ধা বাবা-মা’ও এই সময়ের অভাবে অবহেলিত হচ্ছে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের তরফ থেকে লাঞ্ছনা, বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে তাদের।
প্রতিবেদন বলছে, বৃদ্ধাদের অবহেলা রুখতে প্রচার চালালে হয়তো এই সমস্যা কিছুটা লাঘব হতে পারে। সেই সঙ্গে বয়স্কদের বার্ধক্যজনিত শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাদের সুষ্ঠু চিকিৎসার ব্যাপারে পরিবারকে সতর্ক হওয়া উচিৎ।
হেল্প এজ ইন্ডিয়ার সিইও রোহিত প্রসাদ জানান, ৬০ বছরের উর্ধে মোট মহিলার সংখ্যা ২০২১ সালে জনসংখ্যার ১১ শতাংশ এবং ২০৩১ সালের মধ্যে ১৪ শতাংশে পরিণত হবে (৭২ কোটির মধ্যে ১০ কোটি)।