পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: শনিবার রাত ১১ টায় অমিত শাহর বাসভবনে হাজির হন আন্দোলনকারী কুস্তিগিররা। সেখানে নতুন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে কুস্তি ফেডারেশন প্রধান ব্রিজভূষণ শরণ সিং-র এর বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও গ্রেফতারির দাবি জানানো হয়। যদিও ১ ঘন্টার সেই বৈঠক মোটেই ফলপ্রসূ হয়নি। সেখান থেকে কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি বলে জানান সাক্ষী মালিক।
উল্লেখ্য, সাক্ষী মালিক, ভিনেশ ফোগাট ও বজরং পুনিয়া নতুন করে রেলের চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। তাদের কাজে যোগ দেওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পর কয়েকটি সংবাদমাধ্যম প্রচার করতে শুরু করে,কুস্তিগিররা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। অমিত শাহর কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েই এমনটা করেছেন তারা। এই ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়তেই মুখ খোলেন সাক্ষী।
সোমবার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে সাক্ষী মালিক বলেন, আমরা এই লড়াই থেকে পিছপা হইনি এবং হব না। ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত এই লড়াই চলবে। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র সঙ্গে দেখা করেছি। কথা বলেছি। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি।
সাক্ষী আরও বলেন-আমরা আমাদের বক্তব্য জানিয়েছি। আলোচনা করেছি। কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। আমি (সাক্ষী), ভিনেশ ও বজরং একজোট হয়েই আছি। আর ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা একজোটই থাকব।
সাক্ষী জানান, তাঁরা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের জন্য। কিন্তু ন্যায়ের লড়াই থেকে তারা এক কদমও পিছুপা হননি। আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়ে ভাবনা চিন্তা চলছে।
ভুয়ো খবর সম্পর্কে সাক্ষী বলেন- নাবালিকা কুস্তিগির তার অভিযোগ তুলে নিয়েছে, এমন ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু তা সত্য নয়। আমাদের আন্দোলনকে দুর্বল করা ও সাধারণ মানুষকে আমাদের আন্দোলন থেকে দূরে সরানোর জন্য ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে।
নাবালিকা সহ যে সাতজন মহিলা কুস্তিগিরের বয়ানের ভিত্তিতে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়, তাদের মধ্যে সাক্ষী মালিকও রয়েছেন। এই লড়ায়ে তিনি পাশে পেয়েছেন স্বামী সত্যার্থ কাদিয়ানকেও। এদিন সত্যার্থ বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে যে ধরণের প্রতিক্রিয়া তাঁরা আশা করেছিলেন, তা পাননি।
উল্লেখ্য, গত ২৩ এপ্রিল থেকে চাঁদি ফাটা রোদ উপেক্ষা করে যন্তরমন্তরে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছে। খুন- তোলাবাজি সহ ৩৮ টি মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি সাংসদ ব্রিজভুষণের বিরুদ্ধে পকসো সহ যৌন নিগ্রহের জন্য দু’দুটি এফআইআর দায়ের হওয়ার পরও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। এফআইআর-র কপিতে ঘৃণ্য অভিযোগ উঠে এসেছে বিজভূষণের বিরুদ্ধে। এমনকি একথাও উঠে আসে, যে ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রীর সামনে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলে সমাধানের আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু আদপে তা তো হয় নি। উল্টে সেই অভিযোগও পৌঁছে যায় ব্রিজভূষণের কানে। পরে ওই নিপীড়িতা কুস্তিগীরকে হুমকি দেয় ব্রিজভূষণ। গঙ্গায় মেডেল বিসর্জনের কথা ঘোষণা করার পরও এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বিজেপি সাংসদ ব্রিজভুষণের বিরুদ্ধে।