কৌশিক সালুই বীরভূমঃ ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষারত্ন পুরস্কার পাচ্ছেন বীরভূম জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন সাহা। ইতিমধ্যেই রাজ্য শিক্ষা দপ্তর এর পক্ষ থেকে তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আগামী ৫ই অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কার প্রাপক শিক্ষক জেলাশাসক এর কাছে থেকে সেই পুরস্কার গ্রহণ করবেন।
চন্দন সাহা। তিনি বর্তমানে বীরভূম জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক।২০১৭ সাল থেকে তিনি সেই দায়িত্বে আছেন। প্রতিবছর শিক্ষক দিবসের দিন রাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষকদের হাতে শিক্ষারত্ন পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। এবার ওই পুরস্কারের জন্য জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন সাহা মনোনীত হয়েছেন। যদিও এই পুরস্কারের ধারা প্রথম নয় বীরভূম জেলায় স্কুল বা ওই প্রধান শিক্ষকের কাছে। 20১৯ সালের রাজ্যের অন্যতম সেরা স্কুল হিসেবে নির্বাচিত হয় বীরভূম জেলা স্কুল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে কলকাতায় সেই পুরস্কার গ্রহণ করেন।
বীরভূম জেলা স্কুলের পড়ুয়ারা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রতিবছর রাজ্যের সেরার তালিকায় থাকে। চন্দন সাহা প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর থেকে বীরভূম জেলা স্কুলের সেই সাফল্যের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। এই স্কুলের বহু পড়ুয়া দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পেশায় সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। সেই ধারা বর্তমানেও অব্যাহত। বর্তমান সময়ে বেসরকারি এবং ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ছেলে মেয়েদের পড়ানোর ব্যাপারে অভিভাবকদের কাছে সবথেকে বেশি গ্রহণযোগ্য। তার মধ্যেও বাংলা মাধ্যমের বীরভূম জেলায় স্কুলে ছেলেদের পড়ানোর ব্যাপারে আগ্রহ চরম জেলার অভিভাবকদের মধ্যে। স্কুলে পড়াশোনার মান এর জন্যই বর্তমানে বীরভূম জেলায় স্কুলের সমান কদর অন্যান্য বেসরকারি বা ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের মত। এছাড়াও প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়াদের মধ্যে যাতে ড্রপ আউট এর সংখ্যা না বাড়ে তার জন্য নিরন্তর প্রয়াস বীরভূম জেলা স্কুলের। তার ফলও হাতেনাতে মিলেছে। সেই সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে এই স্কুলে। শুধু পড়াশোনা নয় খেলাধুলা শরীরচর্চা, সাংস্কৃতিক চর্চা নিয়মিত হয়ে থাকে এই স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যে। বর্তমান অতিমারি সময়ে যেখানে স্কুলে গিয়ে পঠন-পাঠন একেবারেই বন্ধ সেখানে বীরভূম জেলা স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত নিয়মিত অনলাইন ক্লাস হয়ে আসছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মক টেস্ট করাও হয়েছে এই স্কুলে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ছাত্ররা যাতে কোনোভাবেই মোবাইলে আসক্ত না হয়ে যায় তার জন্য নিয়মিত অভিভাবক এবং ছাত্রদের সঙ্গে অনলাইন কাউন্সেলিং করা হচ্ছে স্কুলের পক্ষ থেকে।
চন্দন বাবু সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেন। তিনি শিক্ষকতায় প্রথম কর্মজীবন শুরু করেন ২০০০ সালে টাকি গভমেন্ট হাই স্কুলে। এরপর ২০০৩ সালে কৃষ্ণনগর কলিজিয়েট স্কুলে যোগদান করেন তিনি।২০০৭ সালে বীরভূম জেলা স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। চন্দন সাহা বলেন,” আবেদনের ভিত্তিতে এবছরের শিক্ষারত্ন পুরস্কারে মনোনীত হয়েছি। শিক্ষক দিবসের দিন শিক্ষা মন্ত্রীর ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জেলাশাসক এর কাছ থেকে সেই পুরস্কার গ্রহণ করব”।(ফাইল ছবি)