বিশেষ প্রতিবেদন: ব্রিটেনের বর্তমান রাজা তৃতীয় চার্লসের ঐতিহাসিক রাজ্যাভিষেক আজ। ব্রিটিশ সিংহাসনের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে থাকা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মারা যাওয়ার দিনই রাজা হন তার জ্যেষ্ঠপুত্র চার্লস। ব্রিটেনসহ ১৫টি কমনওয়েলথ দেশের রাজা এখন তৃতীয় চার্লস। তবে সেটি আর কতদিন? কেননা, প্রতীকী হলেও রাজতন্ত্রের প্রতি অনীহা ও প্রজাতন্ত্রের দাবি জোরালো হচ্ছে অনেক দেশেই। রাজা তৃতীয় চার্লস ব্রিটেন ছাড়াও এখন অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, গ্রানাডা, জ্যামাইকা, বাহামাস, বেলিজ, পাপুয়া নিউগিনি, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্রানাডাইন্স, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও টুভ্যালুর রাষ্ট্রপ্রধান। ওয়েস্টমিনস্টার সংবিধির মাধ্যমে ১৯৩১ সালে কমনওয়েলথ সদস্য দেশগুলোতে ব্রিটিশ রাজা বা রানিকে রাষ্ট্রপ্রধান মেনে নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। তবে ১৯৪৯ সালে লন্ডন ঘোষণার মাধ্যমে ব্রিটিশ রাজা বা রানির প্রতি আনুগত্যের ওই বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। অনেক দেশই তারপর ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের প্রতি আনুগত্য থেকে বের হয়ে আসে। কিছু দেশে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় এবং কিছু দেশ স্বাধীন এবং সেখানে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলেও ব্রিটিশ রাজা বা রানির প্রতি এখনও আনুগত্য দেখিয়ে চলছে। তাই ১৫টি দেশের এখনও প্রতীকী রাষ্ট্রপ্রধান ব্রিটেনের নতুন রাজা চার্লস। চার্লস এখন রাজা হলেও রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতি কমনওয়েলথভুক্ত ১৫টি দেশের মানুষের ভক্তি-আনুগত্য ছিল অনেক বেশি। কিছু দেশে আগে থেকেই প্রজাতন্ত্রের দাবি বিরাজমান থাকলেও চার্লস রাজা হওয়ার পর তা আরও জোরালো হয়েছে। দেশগুলোর বাসিন্দাদের অনেকেই ভাবছেন, আর দরকার কি? কমনওয়েলথভুক্ত অন্যতম দেশ অস্ট্রেলিয়ায় বর্তমানে গণতন্ত্র বিদ্যমান। তবে রাজতন্ত্রের প্রতি আনুগত্যের প্রমাণ হিসেবে রাজার প্রতিনিধি হিসেবে একজন গভর্নর জেনারেল রয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার কাছাকাছি থাকা দেশ নিউজিল্যান্ডেও পরিস্থিতি একই। প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স সম্প্রতি বলেছেন, তিনি একজন রিপাবলিকান এবং বিশ্বাস করেন, দেশ একদিন রাজতন্ত্র ত্যাগ করবে। আরেক দেশ কানাডা সংসদীয় গণতন্ত্র এবং আইনগতভাবে রাজতন্ত্র উভয়ই মেনে চলে। তবে রানির প্রতি যেমন আনুগত্য ছিলে, এখন রাজা চার্লসের প্রতি সেই টান তাদের নেই। এক মতামত সমীক্ষায় দেখা গেছে, কানাডিয়ানরা রাজতন্ত্র থেকে দূরে থাকতেই বেশি আগ্রহী। অ্যাঙ্গাস রিড সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশটির বাসিন্দাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজতন্ত্র দেখতে চায় না। আটলান্টিক মহাসাগর আর ক্যারিবিয়ান সাগরের মাঝামাঝি দুটি দ্বীপের রাষ্ট্র সেন্ট কিটস-নেভিস। দ্বীপের বাসিন্দাদের একজন বলেন, ব্রিটেনের চেয়ে চিন ও তাইওয়ান আমাদের বেশি দেখভাল করে থাকে। তাই আমাদের রাজা-রানির দরকার কী?