পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: সমকামী কিংবা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা দৈনন্দিন জীবনে কী কী সমস্যায় পড়েন, খুঁজে বের করতে কমিটি গড়ল কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে এ কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি বলেন, এই কমিটির মাথায় থাকবেন একজন ক্যাবিনেট সেক্রেটারি। প্রাথমিকভাবে এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিল কেন্দ্র। আগেই কেন্দ্রের সেই আপত্তি খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতিদের বেঞ্চ। গত ২৭ এপ্রিল এই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সলিসিটর জেনারেলকে জানান, এই বিবাহকে স্বীকৃতি দেওয়া হোক বা না দেওয়া হোক, ভালোবাসার অধিকার, যৌন সঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকারকে কেড়ে নেওয়া যায় না।
এ দিনও সমলিঙ্গ বিবাহের বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে। তিনি বলেন, সমকামী বিবাহের বিষয়ে ইউরোপীয় ঐক্যমত্য রয়েছে কথাটা ঠিক নয়। তাঁর কথায়, ‘৪৬টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ৬টিতেই সমলিঙ্গ বিয়েকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।’ পাশাপাশি তাঁর আরও দাবি, কোনও নির্দিষ্ট সম্পর্ককে বিয়ের স্বীকৃতি দেওয়াটা মৌলিক অধিকার হতে পারে না।
এক মামলাকারীর আইনজীবী তাঁর মক্কেলের হয়ে এ দিন সুপ্রিম কোর্টের কাছে জানতে চান, ‘কেন আমরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়েই থেকে যাব? আমরা বিয়ে করতে চাই। আমাদের অভিভাবকরা চান আমাদের বিয়ে হোক।’ উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট আগেই জানিয়েছে ব্যক্তিগত আইনকে স্পর্শ না করে সমলিঙ্গ বিয়েকে বৈধতা দেওয়া খুব সহজ কাজ নয়। এই পরিস্থিতিতে আলোচনা কোনদিকে গড়ায় আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে ওয়াকিবহাল মহল।
সমকামী বিবাহ সমাজে যে বহু জটিলতা নিয়ে আসবে তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। আধুনিক পশ্চিমা দেশগুলোতে এখনও সমকামীদের রক্ত গ্রহণের ব্যাপারে শর্ত আরোপ করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বহু বছর সমকামীদের রক্ত নেওয়া হত না। আজও কানাডা, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলিতে সমকামীদের রক্তদানের ব্যাপারে বিধিনিষেধ রয়েছে। রক্ত দিতে চাইলে অন্তত এক বছর তারা যৌন সম্পর্ক করতে পারবে না। রাশিয়াতে সমকামীদের জরিমান সমকামীদের বিবাহ অনুমোদিত হলে উত্তরাধিকার আইনেও বদল আনতে হবে। নতুন করে ভাবনা-চিন্তা করতে হবে দত্তক আইন নিয়েও। পশ্চিমী অপসংস্কৃতি থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার জন্য কঠোর হাতে সমকামী এবং তার অনুসারীদের দমন শুরু করেছে রাশিয়া। এলজিবিটিদের বিরুদ্ধে নতুন করে আইন হয়েছে। এই আইন অমান্য করলে সর্বোচ্চ ৪ লক্ষ রুবল জরিমানা ও এলজিবিটিকিউ কার্যকলাপে লিপ্ত বিদেশি নাগরিককে ১৫ দিন হাজতবাসের পাশাপাশি রাশিয়া থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।