পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: সুদানে সংঘাত থামার লক্ষণ নেই। যুদ্ধ বন্ধের আন্তর্জাতিক আহ্বান সত্ত্বেও সহিংসতা ক্রমশ বাড়ছে। গত আট দিনের যুদ্ধে সুদানের রাজধানী খার্তুমের পরিস্থিতি সবথেকে ভয়াবহ। মুহুর্মূহু গুলি আর বিস্ফোরণের শব্দে বারংবার কেঁপে উঠছে এই শহর। যে যেভাবে পারছে শহর থেকে পালানোর চেষ্টা করছে। কূটনীতিকদের সরিয়ে নিচ্ছে আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশ। খার্তুমের প্রধান সড়কগুলো একেবারেই জনমানবহীন হয়ে পড়েছে। দেখে মনে হবে এটা কোনও ভূতুড়ে নগরী। যত্রতত্র বিধ্বস্ত সামরিক যান পড়ে আছে। বিমান থেকে হামলা চালিয়ে এগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। ক্ষুধার তাড়নায় অনেকে বাইরে বের হলেও বেশিরভাগ এলাকাই ফাঁকা। তবে বাস স্টেশনগুলোতে দেখা যাচ্ছে ব্যস্ততা। বাক্স-প্যাঁটরা গুছিয়ে পালাচ্ছে বহু মানুষ। সুদানিরা ভাবছেন, শীঘ্রই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা কম। শহরের মধ্যে চলাফেরাও কঠিন হয়ে গেছে। ৩০ মিনিটের পথ যেতে সময় লাগছে ৩ ঘণ্টারও বেশি। সুদানে মূলত সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির প্যারামিলিটারি বাহিনী বা আধা সেনা আরএসএফের যুদ্ধ চলছে। এই দুই বাহিনী এক হয়েই ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি ক্ষমতা নিয়ে দুই বাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্ব এখন দেশকে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এই প্রথম সুদানের রাজধানীতে কোনও যুদ্ধ হচ্ছে। এছাড়া খার্তুমের কাছাকাছি বাহরি ও ওমদুরমান শহরেও যুদ্ধ চলছে। কোটি কোটি মানুষ সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যে বাস করছেন।
২৪ ঘণ্টাই যুদ্ধ চলছে। আকাশ থেকে মিসাইল ছোঁড়া হচ্ছে। আর্টিলারি থেকে গোলা চলছে অব্যাহতভাবে। চলছে সরাসরি বন্দুক যুদ্ধও। এরমধ্যেই দেশটিতে থাকা মুসলিমরা ঈদ পালন করেছেন। সহিংসতার কারণে বহু এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বেশিরভাগ এলাকায় নেই পানি। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে হাসপাতালগুলো।
সূত্রের খবর, আরও বড় পরিসরে গ্রাউন্ড অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে সামরিক বাহিনী। এতে খার্তুম ও এর আশপাশের দুই বড় শহরে যুদ্ধ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা। গত ১৫ এপ্রিল শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ৫০০জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। আহত ৩,৭০০ জনেরও বেশি। প্রতিবেশী দেশ চাদে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় নেওয়ার জন্য যাচ্ছে। এছাড়া মিশরেও শরনার্থী সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও ভারতসহ বহু দেশ তাদের কূটনীতিক ও নাগরিকদের আকাশপথে উদ্ধার করেছে।