দেবশ্রী মজুমদার, শান্তি নিকেতন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কালো ছিলেন, তাই মায়ের কোল পেতেন না– কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে তীব্র নিন্দার ঝড় বিভিন্ন মহলে। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী হলে বক্তৃতা দেওয়ার সময় এমন বিতর্কিত মন্তব্য করেন ।
সম্প্রতি খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের পচাত্তর তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের ভাষণে বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামী মাতঙ্গিনী হাজরাকে অসমের স্বাধীনতা সংগ্রামী বলেছেন। তার আগে শান্তিনিকেতনে বিশ্ব কবির জন্মভূমি বলেন। এবার কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীও ঠাকুর পরিবারে বর্ণবিদ্বেষ প্রসঙ্গের বিতর্ক উসকে দিলেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গায়ের রঙ তাঁর অন্যান্য ভাইয়ের মত ফর্সা ছিল না। বরং একটু চাপা ছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এনিয়ে জীবন স্মৃতিতে রসিকতা করেছেন। সেখানে কবির মা বলেছেন, রবি আমার কালো। কবির মার নির্দেশে দুধের সর ও ময়দা ইত্যাদি দিয়ে রূপটান দেওয়া হতো কবিকে। কিন্তু তার অর্থ কখনো বর্ণ বিদ্বেষ নয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন স্মৃতির কোথাও বলা নেই যে মা সারদা দেবী তাঁকে কোলে নিতেন না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাড়ির চতুর্দশ সন্তান। সারদাদেবীর নাতি হয়ে গেছে প্রায় রবীন্দ্রনাথের বয়সী। সেই সময় তাঁর মা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে কোলে বসে থাকবেন না, এটাই স্বাভাবিক । তাছাড়া ঠাকুর পরিবারে চাকরবাকরের কাছে সবাই মানুষ হতেন। তাই মা কোলে নিতেন না, এ তথ্য উধোর ঘাড়ে বুধোর পিণ্ডি বলে মন্তব্য করেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজ কলি সেন।
তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড় দিদি সৌদামিনীর কথায় , রবির গায়ের রঙ কালো হলেও, সেই ছিল জগতের আলো। আসলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গায়ের রঙ ছিল অনেকটাই মাখনের মতো। হাত পায়ের রঙ ছিল পদ্মফুলের রঙের মতো।
বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী দেবব্রত সরকার বলেন, ইনাদের মতো লোকজন বিশ্বভারতীর মতো ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা অঙ্গণকে কলুষিত করছে।