রেজাউল করিমঃ মোথাবাড়ি গঙ্গার জলস্তর হু হু করে বাড়ছে। চরম বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে গঙ্গা। লাল সতর্কতা জারি করেছে সেচ দফতর। এরই মধ্যে কালিয়াচক-২ ব্লকের বাঙিটোলার জোতকস্তুরি সাকুল্লাপুর এলাকা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এছাড়াও– কালিয়াচক-৩ ব্লকের বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকা বাসীরা।
প্রসঙ্গত সাকুল্লাপুর এলাকায় পুরনো স্মৃতি নিয়ে আরও আতঙ্কিত তাঁরা। সংশ্লিষ্ট ব্লকের কেবি ঝাউবোনা এলাকায় আস্ত একটি গ্রাম পঞ্চায়েত বিলীন হয়ে যায় গঙ্গায়। সেই আতঙ্ক আজও তাড়া করে বেড়াচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। যদিও সেচ দফতরের উদ্যোগে নতুন পদ্বতিতে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ শুরু হয়েছে।
জানা গেছে–
এই মুহূর্তে সকুল্লাপুর এলাকার উপরে সর্বদা তীক্ষ নজর রাখা হচ্ছে। সারারাত জেগে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে সেচ দফতরের কর্মচারীরা। যেহেতু এ বছর নতুন করে বাঁধ তৈরি হয়েছে তাই বাঁধের মাটি আলগা আছে। সকুল্লাপুর এলাকায় দু’একটি জায়গায় ছোটখাট ভাঙ্গন শুরু হয়েছিল।
সেচ দফতর যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ করে সেই ভাঙ্গন আপাতত ঠেকিয়ে রেখেছে বলে দাবি করছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য– গত বছর বর্ষার মরসুমে সকুল্লাপুরের জোতকস্তুরী এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছিল। গঙ্গা এই এলাকায় ইংরেজি ‘ইউ’ আকৃতি ধারণ করে ভিতরের দিকে ঢুকে গেছে। এরজেরে পঞ্চনন্দপুরের গোলকটোলা– পাঁচকড়িটোলা,খাসমাহাল, গোলকটোলা, দড়িদিয়ারা– গৌড়পাড়া,কামালতিপুরে ভাঙনের আশঙ্কায় বাসিন্দাদের রাতের ঘুম উড়েছিল।
যদিও এবছর বাঙিটোলা এলাকায় সেচ দফতর সুখা মরসুমেই ভাঙন প্রতিরোধ এর কাজ শুরু করেছে। সম্প্রতি সেচ দফতর সাকুল্লাপুর এলাকায় গঙ্গার তীর বরাবর ১১৫০ মিটার গঙ্গা ভাঙন রোধের কাজ করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সুধীর মন্ডল– কীরণ চৌধুরিদের আশঙ্কা– ‘নতুন বাঁধের মাটি এখনও আলগা আছে। গঙ্গায় জল বাড়ার জেরে বাঁধে মাঝেমধ্যেই ধস নামছে। এই মুহূর্তে যে কোনও সময় বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা রয়েছে। বাঁধ ভাঙলে জোতকস্তুরী– সাকুল্লাপুর সহ গোটা বাঙিটোলা অঞ্চল জলের তলায় চলে যাবে।’
‘বাঙিটোলা অঞ্চলের প্রধান সানতারা খাতুন জানিয়েছেন– ‘বাঙিটোলা ও পঞ্চানন্দপুর এলাকায় গঙ্গার ধার বরাবর ৩ কিলোমিটার এলাকায় নদী বাঁধ ছিল না। আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে সেচ দফতর ভাঙন প্রতিরোধের কাজ শুরু করেছে।এ বিষয়ে সেচ দফতরের মালদা ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার প্রণব সামন্ত বলেন– ‘সাকুল্লাপুর এলাকায় নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধের কাজ অনেক আগে থেকেই এখানে করা হয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটি জায়গায় বাঁধের মাটি আলগা হয়ে ধস দেখা দিয়েছে। সেখানে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
অন্যদিকে– বন্যায় ভাসছে কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। পারদেওনাপুর-শোভাপুর– কৃষ্ণপুর– বাখরাবাদ– কুম্ভিরা গ্রাম পঞ্চায়েতের একাংশ বিস্তৃর্ণ এলাকা জলমগ্ন। গঙ্গার জলস্তর ২৫.৮৬ মিটার। চরম বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে গঙ্গা বইছে এখন। ফলে নৌকা– কলার ভেলায় করে যাতায়াত করতে হচ্ছে প্লাবিত এলাকার মানুষদের।