পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মার্কিন ফিনান্সিয়াল রিসার্চ সংস্থা ‘হিন্ডেনবার্গ’-এর রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই আদানি গ্রুপের শেয়ার হু-হু করে পড়তে শুরু করেছে। বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে বিনিয়োগকারীদের। এই বিনিয়োগকারীদের তালিকায় রয়েছে দেশের বৃহত্তম বিনিয়োগকারী সংস্থা এলআইসি-ও। রয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই)। যদিও শনিবার এসবিআইয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি দিয়ে গ্রাহকদের আশ্বস্ত করে বলা হয়েছে, তাদের ব্যাংকের বিপুল অঙ্কের ঋণ সুরক্ষিত রয়েছে। এসবিআই গ্রাহকদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেও এলআইসি এখনও নীরব।
জানা গিয়েছে, আদানির সংস্থার শেয়ারে ধসের কারণে গত দু’দিনে ১৮ হাজার কোটি টাকা হারাতে হয়েছে এলআইসিকে। ফলে এলআইসি’র গ্রাহকরা উদ্বিগ্ন।
একইসঙ্গে তারা উদ্বিগ্ন এলআইসি’র নীরবতা নিয়েও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায়তেও সমালোচনা শুরু হয়েছে। নেটিজেনরা সেখানে বলছেন, ‘পরীক্ষা পে চর্চা’য় প্রধানমন্ত্রী পড়ুয়াদের যে পরামর্শ দিয়েছেন তা তিনি আদানিকে দিলে ভালো করতেন।
গত দু’দিনে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি খুইয়েছে আদানির সংস্থা। সোমবার বাজার খুললে শেয়ার আরও পড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদানি গোষ্ঠীকে সবচেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই)।
ফলে প্রশ্ন উঠছে, আদানির জন্য কি বড় ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটিও? যদিও শনিবার স্টেট ব্যাঙ্কের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আদানিকে ঋণদান নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয় তারা। ব্যবসায়ী সংস্থার ঋণ-মূল্যের সমপরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে তাদের হাতে। ফলে ব্যাঙ্কের অর্থ সুরক্ষিত রয়েছে।
এসবিআইয়ের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে আশ্বস্ত করা হলেও এলআইসি নিয়ে গ্রাহকদের উদ্বেগ কিন্তু বাড়ছে। কারণ, আদানি গ্রুপের শেয়ারে বড় অঙ্কের টাকা লগ্নি করা আছে এলআইসি’র। এখন আদানি গ্রুপের শেয়ারে ধস নামায় এলআইসিতে গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা কতটা সুরক্ষিত রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
প্রশ্ন উঠছে কোন জাদুতে এলআইসির ২৫ কোটি গ্রাহকের অর্থ বিনিয়োগ করা হল আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার কিনতে। কার কথায় ঝুঁকি নিয়ে এলআইসি সেখানে বিনিয়োগ করতে গেল? তথ্য বলছে, এলআইসি ৩৭০ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ করেছে আদানি এন্টার প্রাইজের শেয়ার কিনতে।
কংগ্রেস ও সিপিএমের মতো বিরোধী দলগুলিও দাবি করেছে, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে সেবি, আরবিআই তার তদন্ত করুক। আদানি গোষ্ঠীর তরফে অবশ্য ফের দাবি করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা ভুয়ো। তারা আমেরিকার ওই সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে চলেছে। এজন্য আইনি পরামর্শ নেওয়াও শুরু করেছে তারা। পালটা ‘হিন্ডেনবাগ রিসার্চ’ ও জানিয়েছে তারা মামলার জন্য তৈরি।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের প্রথম থেকেই লাগাতার বাড়তে থাকে আদানির সম্পত্তির পরিমাণ। ওই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই মুকেশ আম্বানিকে টপকে যান আদানি। ঠিক রূপকথার মতো উত্থান। সেই আদানির সাম্রাজ্য এখন টালমাটাল