পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ২৪ জানুয়ারি, মঙ্গলবার। হঠাৎই বিপর্যয় নেমে আসে উত্তর প্রদেশের লখনউতে। শহরের হজরতগঞ্জ এলাকার একটি বহুতল বাড়ি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থলেই তিন জনের মৃত্যু হয়। ধ্বংসস্তূপের ভিতরে চাপা পড়ে যায় অনেকেই। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসে উদ্ধারকার্য বাহিনী। একটু একটু করে শুরু করে উদ্ধারকাজ।
সেই সময়ই ওই ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হয় বছর ছয়েকের এক বালক। এত বড় বিপর্যয় হলেও, তাঁর গায়ে সেভাবে আঁচ লাগেনি। তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বিশেষ কিছু চিকিৎসা করতে হয়নি। চিকিৎসার সময় ডাক্তারের এক প্রশ্নের উত্তরে ওই বালক বলে ওঠে ডোরেমন বাঁচিয়েছে তাঁকে। তাঁর জন্যই সে আজ শ্বাস নিতে পারছে। ছোট বাচ্চার মুখে এমন কথা শুনে অবাক হয়ে যায় চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য, যারা কার্টুন দেখতে ভালবাসেন তাঁদের কাছে ডোরেমন নামটি অপরিচিত না হওয়ারই কথা। পৃথিবী বিখ্যাত এই কার্টুনটি ভারতের অনেক বাচ্চাই দেখে থাকে। জাপানের এই কার্টুনটি একদম ‘ফেয়ারি টেলের’ মতো।
ডোরেমন হল অত্যাধুনিক এক রোবট। সাধারণ মানুষের মতোই সে। তাঁর বুদ্ধি আছে, আনন্দ পেলে হাসে, দুঃখ পেলে কাঁদে। সেই সঙ্গে নৌবিতা, সিজুকা, জিয়ান সোনিয়-ওর সঙ্গে দস্যিপনায়ও মেতে ওঠে। যে ভবিষ্যৎ থেকে নৌবিতা নামক এক কিশোরের জীবনে আসে। তবে সে কি করে বাস্তবে একটা বাচ্চার জীবন বাঁচাবে ? তাও আবার এমন ঘটনা থেকে। কারণ সে তো এক কাল্পনিক চিরিত্র।
আসল ঘটনা হল ২৪ জানুয়ারির সন্ধ্যায় ঘরে বসে টিভি দেখছিল ৬ বছরের ওই কিশোর। নাম মুস্তাফা। সঙ্গে ছিল ঠাকু মা বেগম হায়দার, মা উজমা হায়দার, ও ঠাকুর দা। তখনই হঠাৎ করে কেঁপে ওঠে গোটা বাড়ি। কিছু বুঝে ওঠার আগে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ওই বহুতল।
বাড়ি কেঁপে ওঠা দেখে ৬ বছরের মুস্তাফা ভাবে ভুমিকম্প হচ্ছে। তাই সে খাটের নীচে লুকিয়ে পড়ে। কারণ তাঁর মনে পড়ে গিয়েছল প্রিয় কার্টুন ডোরেমনের নৌবিতার কথা। যখন ভুমিকম্প আসে সে কি ভাবে খাটের নীচে লুকিয়ে পড়ে।
ওই ধ্বংসস্তূপ থেকে মুস্তাফার আম্মি, ও পরিবারের সবাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বেঁচে ফেরেনি কেউই। শুধু মাত্র ৬ বছরের ওই শিশু ছাড়া। বাবা আব্বাস হায়দার সে সময় বাড়িতে ছিলেন না তাই তিনি বেঁচে যান। খাটের নীচে ঢুকে পড়ার জন্যই বেঁচে গেছে সে। কার্টুন মানেই খারাপ এমনটা অনেকে ভেবে থাকে। তবে সেটা আদতে ঠিক নয়। কার্টুন থেকে অনেক কিছু সেখাও যায়। সেটা এই ঘটনা থেকেই পরিষ্কার হয়ে যায়।
তবে কি কারণে বহুতলটি ভেঙে পড়ে তা এখনও স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে চলমান কনস্ট্রাকশনের জেরে এই দুর্ঘটনা। এছরাও ওই দিন দুপুরে ভূমিকম্পের সময় বাড়িটি কেঁপে উঠেছিল। তারজন্যও এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।