পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : ‘ভোটাধিকার আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, কিন্তু তাই বলে কেন্দ্রের কাছে নির্বাচনের জন্য ভিক্ষা চাই না, কাশ্মীরের মানুষ ভিখারি নয়,’ মঙ্গলবার দিল্লি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেখে এইভাবেই সোচ্চার হলেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহ সভাপতি ওমর আবদুল্লা। অনন্তনাগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এদিন তিনি বলেন, ভোটাধিকার মানুষের অধিকার, কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ ভোটের জন্য কেন্দ্রের কাছে ভিক্ষা চাইবে না।
আবদুল্লা ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, বিজেপি সরকার জানে একটি নির্বাচিত সরকারের কাজ জনগণের ক্ষত নিরাময়ের চেষ্টা করা, কিন্তু তারা সেই ক্ষতে কেবল নুন আর লঙ্কা ঘষে দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছে। এবছর নির্বাচন না হলে, না হবে, কিন্তু আমরা ভিক্ষা চাইব না।
অনন্তনাগে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়ে ওমর আবদুল্লা বলেন, ‘আমি আমি বার বলেছি, কাশ্মীরিরা ভিখারি নয়। নির্বাচন আমাদের অধিকার, কিন্তু এই অধিকারের জন্য আমরা তাদের কাছে ভিক্ষা করব না। তারা যদি আমাদের জন্য নির্বাচন করতে চায় ভালো, কিন্তু না হলে, না হবে। তাই বলে কাশ্মীরিদের কেন্দ্রের কাছে নির্বাচনের ভিক্ষার প্রয়োজন নেই।’
সাংবাদিকরা সম্পত্তি ও রাজ্যের জমি থেকে স্থানীয়দের উচ্ছেদ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওমর আবদুল্লা বলেন, ‘এটি জম্মু-কাশ্মীরের নির্বাচন না হওয়ার অন্যতম কারণ। আর এই কারণেই তারা নির্বাচন করছে না।’ লাগাতার ক্ষোভ উগরে দিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা বলেন, ‘মানুষের ক্ষতগুলিকে মলম লাগানোর পরিবর্তে কেন্দ্রের বিজেপিশাসিত সরকারের কাজ সেখানে আরও আঘাত করা। ক্ষতের উপরেই নুন ছিটিয়ে যাচ্ছে তারা’।
গত ১ জানুয়ারি রাজৌরি জেলার ধংরি গ্রামে সন্ত্রাসী হামলায় সাতজন নিহত এবং ১৪ জন আহত হয়। এর পরেই গ্রামে প্রতিরক্ষাবাহিনীর হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার সিন্ধান্ত নেয় কেন্দ্র সরকার। সেই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তরে ওমর আবদুল্লা বলেন, সরকার আগে বলেছিল জম্মু-কাশ্মীর উন্নয়ন, অশিক্ষা, সন্ত্রাসবাদের জন্য পিছিয়ে আছে। ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বাতিলের পরে কেন্দ্র সরকারে দাবি ছিল এবার এগুলি সব বন্ধ হয়ে। কিন্তু সরকার যে শুধু ভাঁওতাবাজি দিয়েছিল তা স্পষ্ট।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্র সরকার ৫ আগস্ট ২০১৯ দেশবাসীর সামনে বলেন, ৩৭০ ধারা বাতিল করার সঙ্গে সঙ্গে কাশ্মীরে বন্দুক সংস্কৃতি কমতে শুরু করবে। এই প্রসঙ্গ টেনে এনেই ওমর আবদুল্লা বলেন, পরিস্থিতির সঙ্গে যে কেন্দ্রের কাজের কোনও মিল নেই সেটি স্পষ্ট। কারণ রাজৌরিতে যে হামলা হয়েছে, কাশ্মীরের পরিস্থিতিতে যেভাবে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে, তার থেকেই বোঝা যাচ্ছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই।